Published : 27 Jan 2025, 11:53 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন বাতিলের দাবিতে ঝাড়ু নিয়ে মিছিল করেছে দলটির স্থানীয় একটি পক্ষ।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা হাতে ঝাড়ু নিয়ে শহরে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জেলার বিএনপির সম্মেলন প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এর আগে দুই দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করে এক পক্ষ সব প্রস্তুতি নিলেও অন্য পক্ষের অনঢ় বিরোধিতার জন্য কেন্দ্র থেকে দুটি তারিখই পরিবর্তন করা হয়।
গত ২২ জানুয়ারি সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও আইনজীবী আ জ ম মোরশেদ আল মামুনের সই করা জেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ১০ অগাস্ট জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এরপর মতানৈক্য দেখা দিলে কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।
কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে থাকে একটি পক্ষ।
কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে আরেকটি বড় অংশ রয়েছে।
গত প্রায় দুই বছর ধরে বিবদমান দুটি পক্ষ আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছে।
নেতাকর্মীদের বিরোধ দূর না করেই গত বছরের ২ নভেম্বর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সইয়ে দলের ফেইসবুক পেইজে জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সেখানে আগের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে অপরিবর্তিত রাখা হয়।
আংশিক কমিটির ২ ও ৩ নম্বর সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও জহিরুল হক খোকন নতুন কমিটিতে ৩ ও ৪ নম্বর এবং কবির আহমেদ ভূঁইয়াকে ৩২ নম্বরে রাখা হয়েছে।
এদিকে, জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর হাফিজুর ও জহিরুলের নেতৃত্বে শহরে সম্মেলনবিরোধী একাধিক সমাবেশ হয়।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের পাওয়ার হাউজ রোড এলাকা থেকে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে ঝাড়ু নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টেংকের পাড় এলাকায় গিয়ে সমাবেশ করে।
ঝাড়ু মিছিলে নেতাকর্মীরা ১ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদস্য কবির আহমেদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আজমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মইনুল হোসেন চপল, সাবেক সহসভাপিত গোলাম সরোয়ার খোকন, শফিকুল ইসলাম।
মইনুল হোসেন চপল বলেন, “কবির আহমেদ ভূঁইয়া ও তার অনুসারীরা মিলে ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির মূলশক্তি ও মূল ধারাকে পাশ কাটিয়ে এই সম্মেলন দেওয়া হয়েছে। আমরা এই সম্মেলন প্রতিরোধ করব। যাকে নিয়ে আজকে এই সম্মেলনের আয়োজন চলছে, সেই কথিত কবির আহমেদ ভূঁইয়া ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।”
চপল বলেন, “সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিএনপির নেতৃত্ব দেবে, এটা তৃণমূল বিএনপি কখনই মেনে নিতে পারে না। এটা মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের এই আন্দোলনটা বিএনপির ত্যাগী নেতাদের পক্ষে। এই আন্দোলনটা আমরা চালিয়ে যাব। আমরা জেলার ত্যাগী নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে সুষ্ঠু জেলা সম্মেলন চাই।”
গোলাম সারুয়ার খোকন বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।”
তবে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান ও সদস্যসচিব সিরাজুল ইসমামের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।