Published : 12 Apr 2025, 09:17 PM
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্সে মিলেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
শনিবার দিনভর গণনা শেষে রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়ার কথা জানালেন পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের ডিসি ফৌজিয়া খান।
এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর মসজিদের ১০টি দানবাক্স থেকে সর্বোচ্চ ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
ডিসি ফৌজিয়া খান বলেন, শনিবার ১১টি দানবাক্স থেকে পাওয়া ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে।
সকালে গণনা শুরুর পর ডিসি সাংবাদিকদের বলছিলেন, পাগলা মসজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দান থেকে প্রাপ্ত মোট ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা রয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও জেলার এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ৪ মাস ১১ দিন ব্যবধানে ১১টি দানবাক্স খোলার পর ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
এবার টাকা গণনার কাজেও সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষকে যুক্ত করা হয়।
মোট ৪৯৪ জনের বিরাট টিম টাকা গণনার কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
পাগলা মসজিদ মাদরাসা ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মোট ২৮৬ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ৩৬৬ জন টাকা ভাজ করা ও গণনার কাজ করেন।
সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসারের ৭৫ জন সদস্য ছাড়াও মসজিদ-মাদ্রাসার ৩৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সহায়তা করেন। টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সন্ধ্যা ৬টার দিকে গণনা শেষ হয়।
নগদ টাকার পাশাপাশি দান করা বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনা-রুপার গয়নাও মেলে। তবে সেসব পরে গণনা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান।
তিনি বলেন, দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ ও এর অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া দানের টাকায় জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা করা হয়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা।
জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত।
কথিত আছে, প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামে এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন।
পরে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
আরো পড়ুন:
পাগলা মসজিদের ১১ দানবাক্সে ২৮ বস্তা টাকা, চলছে গণনা