Published : 06 Jun 2025, 10:12 PM
বরিশালে কোস্ট গার্ড সদস্যদের হুমকি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চের মালিক ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কোস্ট গার্ড।
শুক্রবার রাতে কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে বরিশাল মহানগর পুলিশের থানায় মামলাটি করা হয়েছে বলে জানান বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান।
কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশিদ বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে নৌপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোস্ট গার্ড নিয়মিত টহল ও অভিযান পরিচালনা করছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চটি ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি তিন ঘণ্টা বিলম্বে ঘাট ত্যাগ করে। পরে মাঝ নদীতে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলে নৌকা ও ট্রলারের মাধ্যমে লঞ্চে যাত্রী উঠানো হয়। এভাবে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে এক হাজার ৫৫০ জনের বেশি যাত্রী ওঠানো হয়।
লঞ্চটিতে প্রায় চার হাজার যাত্রী তোলা হয়। এতে লঞ্চের ছাদেও যাত্রী ওঠে। ভোরে বৃষ্টি হলে যাত্রীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিচে নামতে না দিয়ে গেইট তালা ঝুলিয়ে দেয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এতে বৃষ্টিতে ভিজে শিশু, বৃদ্ধ ও নারীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, সকালে লঞ্চটি বরিশাল নৌ-বন্দরে ভেড়ার পর অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা হয়। যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এমনকি কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কোস্ট গার্ড, সেনাবাহিনী ও নৌ-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এক পর্যায়ে কোস্ট গার্ডের মধ্যস্থতায় যাত্রীদের সঙ্গে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সমঝোতা হয়। পরে কোস্ট গার্ড সদস্যরা যাত্রীদের লঞ্চ হতে নিরাপদে নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
কিছুক্ষণ পর লঞ্চ মালিক মঞ্জুরুল আহসান ও তার ছেলে শান্ত হাসান ঘটনাস্থলে গিয়ে দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্যদের ‘হুমকি’ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেন বলে জানান হারুন-অর-রশিদ।
পরে রাতে মঞ্জুরুল আহসান, তার ছেলে শান্ত হাসান ও লঞ্চ স্টাফদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নাশকতামূলক আচরণ এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। মামলা রুজুর পর বিস্তারিত জানানো হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌসের মোবাইলে কল করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা বলেন, “ঘটনার একটি প্রতিবেদন হেড অফিসে পাঠিয়েছি। তারা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।”