Published : 14 May 2025, 03:57 PM
লক্ষ্মীপুর শহরের আল-মঈন ইসলামী একাডেমির হেফজ বিভাগের আট বছরের এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় আটক এক শিক্ষককে বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে নিহত ছাত্রের বাবা ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, অধ্যক্ষ বশির আহমেদ এবং ফয়সালের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
নিহত সানিম হোসাইন রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে। সে হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।
কারাগারে যাওয়া মাহমুদুর রহমান মাহমুদ ওই মাদ্রাসার শিক্ষক।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার ওই মাদ্রাসা থেকে সানিমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে দুপুরে সানিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। শিশুটি টয়লেটে ঢুকে ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে এলাকায় প্রচার করেন শিক্ষকরা। তবে পরিবারের দাবি, সানিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সানিমের ফুফাতো ভাই বকশি মোহাম্মদ শাহিদ হোসাইন বলেন, “সানিম কোরআন শরীফের ২০ পারা মুখস্থ করেছে। ৩ থেকে ৪ দিন আগে মাদ্রাসা থেকে আমাদের কাছে খবর আসে, সানিম নাকি হুজুরের কথা শোনে না, এমনকি হুজুরের নামে বদনাম করে। এ নিয়ে হুজুর তার ওপর রেগে ছিলেন।
“মঙ্গলবার দুপুরে খবর পাই সানিম নাকি টয়লেটে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়েছে। মাদ্রাসা এসে সেই হুজুরে কথা জিজ্ঞেস করতে সবাই বলছে, তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তবে সানিমের লাশ আমরা টয়লেটে পাইনি। তার লাশ মাদ্রাসার নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পেয়েছি। তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
তবে মাদ্রাসার শিক্ষকদের দাবি, সানিম মাদ্রাসা ভবনের তিন তলায় টয়লেটে ঢুকে ‘আত্মহত্যা’ করেছে। পরে শিক্ষকরা তার মরদেহ সেখান থেকে নিচতলায় নামিয়ে একটি কক্ষে রাখেন।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা কক্ষের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সানিমকে গামছা নিয়ে টয়লেটে ঢুকতে দেখা গেলেও বের হওয়া কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। এমনকি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বশির আহমেদ তা দেখাতে পারেননি। সানিমের মৃতদেহ তৃতীয় তলার টয়লেট থেকে শিক্ষকরা নিচতলায় নামিয়েছে বলে দাবি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। তবে নামানোর ভিডিও দেখাতে পারেননি তারা।
সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির বলেন, “আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিচার চাই।”
ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, সানিমকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা মামলা করেছেন। ঘটনার পর আটক শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগে শিক্ষক আটক