Published : 04 Jun 2025, 03:08 PM
২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পুরনো ভাড়াতেই পাবনার কাজিরহাট এবং মানিকগঞ্জের আরিচা নৌপথের মধ্যে স্পিডবোট সেবা চালু হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ২১০ টাকা ভাড়াতেই স্পিডবোট চালু করেছে মালিকপক্ষ।
ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে স্পিডবোট সেবা বন্ধ রাখে মালিকপক্ষ। এতে ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার মানুষ। তারা বাধ্য হয়ে লঞ্চ ও ফেরীতেই পারাপার হন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ এর নগরবাড়ি-কাজিরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল বলেন, “স্পিডবোট বন্ধের পর বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসন কর্মকর্তারা মিলে সংশ্লিষ্ট মালিকদের সঙ্গে দফায় দফায় আলাপ করি। প্রজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে ভাড়া বাড়ানোর কোনোরকম সুযোগ নেই- এ বিষয়টি তাদের বোঝাতে চেষ্টা করি। এ ক্ষেত্রে ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা হাজার হাজার যাত্রীর ভোগান্তির বিষয়টি নিয়েও আলাপ হয়।
“এরপর বুধবার সকালে তারা সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২১০ টাকাতেই স্পিডবোট চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১১ সালে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস চালু হয়। যার নিয়ন্ত্রণ ছিল দুই পাড়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতে। প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নৌপথে জনপ্রতি যাত্রী ভাড়া ২১০ টাকা নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএ। কিছুদিন পর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, চালকের বেতন ও অন্যান্য খরচ বিবেচনায় বোট মালিকরা যাত্রী ভাড়া ২৫০ টাকা হারে আদায় করতে শুরু করেন।
সম্প্রতি ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে বিআইডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসন। এরপর ঘাটের দুই পাশে সেনাবাহিনীর তৎপরতায় নির্ধারিত ভাড়া ২১০ টাকা করে নিতে বাধ্য করা হয় বোট মালিকদের।
এরপর ২৯ মে বেড়া উপজেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা নির্ধারিত ভাড়া আদায়, ঈদ উপলক্ষে এই নৌপথে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে মতবিনিময় করে। এর পরদিন থেকেই ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না দেওয়া হলে স্পিডবোট বন্ধ রাখা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন স্পিডবোট মালিকপক্ষ।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল থেকে স্পিডবোট চালানো বন্ধ রাখে মালিকপক্ষ। ২৪ ঘণ্টায় মাথায় বুধবার সকাল ১০টা থেকে আবার স্পিডবোট চলাচল শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে আরিচা-কাজিরহাট বোট মালিক সমিতির সভাপতি, বেড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন বলেন, “আমরা এখনো বলছি, ঈদযাত্রায় এই ভাড়ায় আমাদের লোকসান হবে। এজন্যই আমরা ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটি কর্ণপাতই করেননি। এখন লোকসান হলেও ঈদে মানুষের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বোট চালাতে হবে।”