Published : 16 Jun 2025, 04:57 PM
লক্ষ্মীপুরে আদালতে আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে।
আহত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামান দুই আইনজীবীকে আসামি করে রোববার রাতে আদালতে মামলাটি করেন।
দুই আইনজীবী হলেন- লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে এবং সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আশিকুর রহমান এবং রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে আইনজীবী মিরাজ উদ্দিন।
মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমারান হোসেন দুপুরে জানান, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম সদর আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঈদের ছুটি শেষে রোববার আদালতের প্রথম কার্যদিবস ছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইনজীবী মিরাজ ও আশিক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর এজলাসে আসে। একপর্যায়ে তারা চিৎকার-চেঁচামেচি করে জোরপূর্বক বিচার প্রার্থীদেরকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে অস্বীকার করেন।
এতে আসামিরা এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেয় এবং পরে লাথি মেরে দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। এ সময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন তাদেরকে বাধা দেন।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আশরাফুজ্জামানের মাথায় আঘাত করে। আইনজীবী আশিকের আঘাতের তার বাম চোখের কোণায় রক্তাক্ত জখম হয়। একপর্যায়ে তার জামা ছিঁড়ে ফেলেন। তাকে বাঁচাতে এলে জারিকারক সুমনও মারধরের শিকার হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ৬ জুন সদর মডেল থানায় লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব একটি চুরির মামলা করেন। সেই মামলায় রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান এবং ট্রাক চালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।
৯ জুন তারা আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। সেই আবেদনে বলা হয়, মামলার বাদী একজন আইনজীবী। এজন্য আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নেননি।
আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য আসামিরা লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হয়। কিন্তু হেনস্তার ভয়ে তারা জামিন শুনানিতে অংশ নেননি।
১০ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
রোববার দুপুরে আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এসময় সাত থেকে আটজন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক হট্টগোল দেখা দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক তখন কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। তখন আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই বিচারক এম সাইফুল ইসলাম এজলাস থেকে নেমে যান।