Published : 22 May 2024, 12:26 AM
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ছোট ভাইকে হারিয়ে জয় পেয়েছেন মন্ত্রীর ছেলে।
এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে ছিলেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ এবং মন্ত্রীর ছোট ভাই ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ।
তবে মঙ্গলবার দিনভর ভোটের পর শেষ হাসি ফুটেছে মন্ত্রীর ছেলের মুখেই।
রাতে ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, রাকিবুজ্জামান আহমেদ আনারস প্রতীকে ২৪ হাজার ৩৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২০ হাজার ১৯১ ভোট।
মাহাবুবুজ্জামান আহমেদ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। বড় ভাই নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকেই টানা ১০ বছর তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলার তুষভাণ্ডার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাহবুবুজ্জামান আহমেদের স্ত্রী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাজেদা জামান প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।
কিন্তু সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ তার ভাইয়ের স্ত্রীকে দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে নুর ইসলাম নামের আরেক প্রার্থীকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন বলে অভিযোগ করেন মাহবুবুজ্জামানের পরিবার। এ থেকেই পরিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নুরুজ্জামানের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হকের পক্ষে অবস্থান নেন মাহবুবুজ্জামান। ওই সময় ভোটের মাঠে ভাইয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক বক্তব্য দিয়ে ঝড় তুলেন তিনি।
এরপর মাহবুবুজ্জামান ফের উপজেলা চেয়ারম্যান হতে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেন তার ভাতিজা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুজ্জামান আহমেদ।
পরে বাছাইয়ের দিন সংবাদ সম্মেলন করে ভাতিজা রাকিবুজ্জামান হলফনামায় কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপন রেখেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন মাহবুবুজ্জামান।
নির্বাচনি প্রচার চালানোর সময় রাকিবুজ্জামান আহমেদের সমর্থককে মারধর ও নারী কর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করারও অভিযোগ উঠে মাহবুবুজ্জামান আহমেদের বিরুদ্ধে।
ভোটের মাঠেও চাচা-ভাতিজার জমজমাট লড়াই দেখতে মুখিয়ে ছিলেন ভোটাররাও। একই পরিবারের দুই শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় ভোট নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। তবে সব শঙ্কা দূর করে শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয় ভোটগ্রহণ।
এ ছাড়া এই উপজেলায় হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে ভোট যুদ্ধে ছিলেন তারিকুল ইসলাম।
পুরনো খবর
বিরোধী প্রার্থীর সমর্থককে ‘চেয়ারম্যান প্রার্থীর চড়’, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ
উপজেলা নির্বাচন: এমপি-পুত্রের মনোনয়ন বাতিলের দাবি চাচার
কালীগঞ্জে সাবেক মন্ত্রীর ছেলে ও ভাইয়ের লড়াই, আছে শঙ্কাও
স্বতন্ত্র প্রার্থীর মঞ্চে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ‘গীবত করলেন’ তার ভাই