Published : 08 Jan 2025, 12:25 AM
যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে নতুন শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১২ ধরনের আমদানি পণ্য পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাস্টমসের ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট-আইআরএম।
সোমবার বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি বাড়বে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
শর্তের মধ্যে বন্দর দিয়ে ৪০ হাজার ডলারের বেশি মূল্যের পণ্যের চালান কিংবা ২০ হাজারটির বেশি ঘোষণার তৈরি পোশাক (যেমন- শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, আন্ডার গার্মেন্টস ইত্যাদি) পণ্যের চালান কায়িক পরীক্ষা করতে হবে।
কায়িক পরীক্ষার মানে হল- এতে পণ্যের চালান খুলে দেখা হয় এবং ঘোষণা দেওয়া পণ্যের সঙ্গে মিল আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮০ ভাগ পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। সেইসঙ্গে ভারতে পণ্য রপ্তানিও হয়। তবে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করতেও অনেকে এ বন্দর ব্যবহার করে থাকেন।
বেনাপোল কাস্টমসের ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টকে (আইআরএম) বেশিরভাগ দায়িত্ব দেওয়ায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে অধিকতর গতি সঞ্চার তো দূরে থাক হয়রানির মাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একই আদেশে ১২ ধরনের আমদানি পণ্যকে সংবেদনশীল ও শুল্ক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলেছে। এর মানে হল, এসব পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর ফাঁকি দেওয়ার ঝুঁকি বেশি।
পণ্যগুলো হল- অ্যাসর্টেড গুডস, সব ধরনের কাপড়, সকল প্রকার নতুন ও পুরাতন মটর পার্টস (টু হুইলার, থ্রি হুইলার, ফের হুইলার ইত্যাদি) বাইকের যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, প্রসাধনসামগ্রী, ইমিটেশন জুয়েলারি, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রেয়াতি সুবিধায় আমদানি করা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রোপচারের সামগ্রী, একই চালানে পাঁচমিশালি পণ্য। এসব পণ্যের চালানও কায়িক পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পর্যালোচনা করে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, এইচ এস কোডসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পণ্যের চালানের কায়িক যাচাই বাছাই করা, গোপন সংবাদ সংগ্রহ, বন্দরের ভেতর ও বাইরে ঘোষণার অতিরিক্ত কিংবা ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য চালান চিহ্নিত করা ও ফাঁকি উদ্ঘাটন, রাজস্ব আদায় ও খালাস প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং চোরাচালান প্রতিরোধে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য আইআরএম কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী আইজিএম, বিল অব এন্ট্রি লকসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া শুল্ক-কর ফাঁকি রোধে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে; যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।