Published : 29 May 2025, 11:16 AM
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এতে একতলা ভবনের চারটি কক্ষের আসবাবসহ মালামাল পুড়ে গেছে।
উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামে মঙ্গলবার গভীর রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেনের ওই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক জামশেদ আলম জানিয়েছেন।
আলী হোসেন গুণবতী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার স্ত্রী রাশেদা আখতার কুমিল্লা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আলী হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে কুমিল্লা শহরে বসবাস করেন। তারা কেউ ওই বাড়িতে থাকেন না। জামশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি তিন শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন এবং তারাই বাড়ির দেখভাল করেন।
ঘটনার বর্ণনায় স্থানীয়রা বলেন, মঙ্গলবার রাত দেড়টার পর সন্ত্রাসীরা বাড়িটির দরজা-জানালা ভাঙচুর করতে শুরু থাকে। এক পর্যায়ে তারা বসতঘরের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় জামশেদ, তার স্ত্রী ও সন্তান এবং আশপাশের বাড়ির মানুষের চিৎকারে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়।
জামশেদের ভাষ্য, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। কোনো রকমে বাচ্চাগুলোর প্রাণ রক্ষা করতে পেরেছেন। তাদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে আগুন নেভান।
আগুনে একতলা ভবনের চারটি ঘরের আসবাবসহ মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানান তিনি।
আলী হোসেনের স্ত্রী রাশেদ আখতারের বলেন, “আমার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সাবেক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। ২০১৫ সালের পর থেকেই তিনি রাজনীতির বাইরে। তিনি অসুস্থ, চলাফেরাও করতে পারেন না। এখন এই সময়ে এসে কে বা কারা এই কাজ কারা করলো, কিছুই বুঝতে পারছি না।”
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রমদ রঞ্জন বলেন, “আলী হোসেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনার প্রতি কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তাকে আইনের মুখোমুখি করতে পারতেন।
“যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এ ধরনের হামলা ও ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই আমরা। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামাল হোসেন বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেনের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় থানায় নির্দেশনা দেওয়া আছে, তারা কাজ করছে।”
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, হামলা ও আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে কারা হামলা চালিয়েছে, সেটা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন তারা।