Published : 27 May 2025, 06:36 PM
নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা মামলার এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে নেত্রকোণার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আবুল হাশেম।
দণ্ডপাওয়া মো. কাউছার মিয়া (২১) উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের ছামছুদ্দিনের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মুক্তি রাণী বর্মণ (১৬) একই গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মনের মেয়ে। সে প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পিপি আবুল হাশেম বলেন, “মুক্তিকে প্রেম নিবেদন করে উত্ত্যক্ত করতেন কাউছার। কিন্তু এতে রাজি ছিল না মুক্তি। ২০২৩ সালের ২ মে বিদ্যালয় ছুটির পর দুই বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল মুক্তি। পথে কাউছার অতর্কিতভাবে দেশি অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করেন।
সহপাঠীরা মুক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঘটনার দুই দিন পর ৪ মে কাউছারকে আসামি করে থানায় মামলা করেন মুক্তির বাবা নিখিল চন্দ্র বর্মন। পরে তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান পিপি আবুল হাশেম।
আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে কাউছারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেলুয়ারা বেগম। রায় প্রদানের সময় মুক্তির মা, বাবা ও বোনেরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়ে মুক্তির মা প্রণবা রাণী বর্মণ বলেন, “আমি চাই মুক্তির মত আর যাতে কোনো মাকে তার মেয়েকে হারাতে না হয়। আসামির ফাঁসির রায় হয়েছে। এতে আমরা খুশি। রায় যাতে দ্রুত কার্যকর হয় এটাই আমার প্রার্থনা।”
মুক্তির বাবা নিখিল চন্দ্র বর্মণ বলেন, “এই রায় অহন যদি কার্যকর হয় তাহলে আমি অত্যন্ত খুশি। বিচারপতি যে রায় দিয়েছেন এইটা যাতে কার্যকর হয়।”
পিপি আবুল হাশেম বলেন, মামলাটি অত্যন্ত নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর। মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।