Published : 13 May 2025, 09:51 PM
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় যুবলীগের এক কর্মীকে হত্যা করে মরদেহ খালে ফেলে যাওয়ার সময় দুই যুবককে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে লোকজন।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার হলবান পুলের পাশের খালে লাশ ফেলে পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করে ধরে। পরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় বলে জানান বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান।
নিহত জাকির হোসেন (৪০) সোনাইমুড়ী উপজেলার ৮ নম্বর সোনাপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের প্রয়াত রফিক উল্যার ছেলে। সোনাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ছিলেন তিনি।
আটক দুই যুবক হলেন- নোয়াখালী সদর উপজেলার চর কাউনিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫) এবং সোনাইমুড়ি উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে মো. বাবু (৩৩)। আনোয়ার হোসেন অটোরিকশার চালক।
খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ আহত দুজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
দুপুরের দিকে আট থেকে ১০ জন লোক হাসানপুর থেকে জাকির হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় বলে পরিবার অভিযোগ করেছে।
পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে জাকির হোসেন যুবলীগের প্রভাবশালী কর্মী ছিলেন। ৫ অগাস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জাকির তাবলিগে চলে যান। কয়েক মাস আগে এলাকায় ফিরে মাটি বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
জাকির প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করতেন ১২০০ টাকায়। একই এলাকার আরও ১০-১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১৬০০ টাকায়। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে জাকিরের বিরোধ দেখা দেয়। দুইদিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুলিশে দেয় প্রতিপক্ষের কয়েকজন।
নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগমের অভিযোগ, “স্থানীয় ইউসুফ, তুহিন, রাসেল, রাকিব, জসীম শনিবার আমার স্বামীর মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয়। আজকে স্বামীকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করি। আমার স্বামী কয়েক বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেই। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।”
বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, “জাকির একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় ডাকাতি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে।”
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহতদের মধ্যে বাবুকে হাসাপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।