সাইফুল জেলার মধুখালী উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের ছেলে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, জেলার সদরপুর উপজেলার বিশ্ব জাকের মঞ্জিল মাদ্রাসা থেকে ২০১৪ কামিল পাস করেছেন। পরে সালথা উপজেলায় ‘শক্তি সৌর আলো’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন।

“ছেলেবেলা থেকে একটি সাইকেলে করে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন। আর এমন একটি সাইকেল বানাতে চাই, যা দিয়ে আকাশে ওড়া যাবে। কিন্তু সামর্থ্যের অভাবে বিজ্ঞান শিক্ষা নিতে পারিনি। তবু নিজে নিজে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
সাইফুলের সাইকেল চলে সৌরশক্তিতে। স্থলে চালানোর পর পুকুরে পরীক্ষা করেছেন। সম্প্রতি ফরিদপুর শহরতলির ধলারমোড় পর্যটন স্পটে পদ্মা নদীতে সাইকেলটি চালিয়ে দেখান সাইফুল ইসলাম। তিনি সেখানে প্রায় ২০০ মিটারের একটি চ্যানেল অতিক্রম করেন।

তার এ সাইকেলের হ্যান্ডেল ও ক্যারিয়ারে সৌরবিদ্যুতের প্যানেল বসানো হয়েছে। দুই চাকার দুই পাশে আছে চারটি গোলাকার টিউব। পানিতে নামলে এই টিউবের সাহায্যে সাইকেলটি ভেসে থাকে। জল-স্থল উভয় ক্ষেত্রেই এটি সৌরবিদ্যুতে চলে।
সাইফুল বলেন, সাইকেলটি তৈরি করতে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার মত। সময় লেগেছে ছয় মাস।

“বর্তমানে ধান কাটার যন্ত্র ও রিকশা সৌরশক্তিতে চালানোর চেষ্টা করছি। এছাড়া ১৫ জন ধারণক্ষমতার সৌরচালিত স্পিডবোট বানানোর চেষ্টা করছি, যা জলের পাশাপাশি ডাঙায়ও চলবে। এছাড়া এমন একজোড়া জুতা তৈরি করতে চাই, যা দিয়ে অনায়াসে পানির ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যাবে। কিন্তু স্বপ্নপূরণের পথে বাধা অনেক। এ কাজে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমার সামর্থ্য তেমন নেই। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন।”
সাইফুলের সাইকেল এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক আবুল কাশেম।

“বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসছে তার সাইকেল দেখার জন্য। সাইফুলের আর্থিক সঙ্গতি ভাল না থাকায় বেশি দূর এগোতে পারছে না। তার পাশে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাই।”
চরাঞ্চলের মানুষের এ ধরনের সাইকেল বেশ কাজে লাগবে বলে মনে করেন স্থানীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হাসিবুল হাসান।
তিনি বলেন, “সাইকেলটি জনপ্রিয় করতে এর ওজন কমিয়ে আনতে হবে। নির্মাণব্যয় সাধারণের নাগালে রাখার চেষ্টা করতে হবে।”