Published : 10 Oct 2020, 03:56 PM
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী শনিবার সকাল ১০টায় পাটোয়ারী একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ওই নারীর বাড়িতে যান।
তার সঙ্গে ছিল নির্যাতনের মামলার নয় আসামির তিনজন বাদল, আবুল কালাম ও সাজু।
পিবিআইর আরও কর্মকর্তা এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা ওই বাড়িতে ২০ মিনিটের মতো অবস্থানকালে বসতঘরে ঘটনাস্থল ও আশপাশ ঘুরে দেখেন। তবে তারা কারও সঙ্গে কথা বলেননি।
এর আগে শুক্রবার সকালে পিবিআই নোয়াখালীর পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে একটি দল নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে নিয়ে তার বাড়ি পরিদর্শন করেন।
নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বাড়িটিতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে মামলার আসামি মাঈনুদ্দিন সাহেদকে দুই দিন হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দুপুর ২টায় সাহেদকে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে উপস্থিত হন।
বিকালে আসামিকে বিচারকের সামনে উপস্থাপন করা হবে। সাহেদ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে পারে পুলিশ কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা দুই মামলায় এর আগে দুই আসামি সোহাগ ও রাসেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঘরে ঢুকে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও গত সপ্তাহে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে সারাদেশে শোরগোল তৈরি হয়।
তখন পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। এরপর ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি করেন।
দুই মামলার এজাহারে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়।
দুই মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি ৬ জন।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, পুলিশ সদর দপ্তরে নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা দুটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।
পিবিআই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করে মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে। এছাড়া পর্নগ্রাফি আইনের মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানকে।
সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ
নোয়াখালী জেলা শহরে শনিবারও সকাল থেকে নারী নির্যাতনবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন।
সকালে জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল ফারাহ পলাশ, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন কৈশোর, জাতীয় কবিতা পরিষদ নোয়াখালীর সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আরমান, নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন, সঙ্গীত শিল্পী কামাল উদ্দিন, গণসঙ্গীত শিল্পী কাজল ভট্টাচার্য, মিজানুর রহমান বঙ্গবিপ্লব, রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া।
সমাবেশে বক্তারা বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনসহ দেশব্যাপী নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সময় বেগমগঞ্জ চৌরাস্তায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।