Published : 17 Feb 2025, 10:36 PM
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় তিতাস নদীতে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি-বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
সোমবার দুপুরে উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের শশই গ্রামের তিতাস নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কয়েকশ মানুষ তিতাস নদীর পাড়ে মানববন্ধনে জড়ো হন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ ও চমক, বুধন্তি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম ওরফে রাষ্টু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিয়া ইয়ার মোহাম্মদ খালেদ রাসেল, বুধন্তি ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ একটি প্রভাবশালী মহল নদী পাড়ে কৃষি জমি সংলগ্ন বুধন্তি এলাকায় খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বালু বিক্রি করছেন। এতে কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। বালু উত্তোলনের প্রতিবাদসহ বন্ধের দাবি জানালে তারা মামলার ভয় দেখাচ্ছেন বলে জানান তারা।
৫ ফেব্রুয়ারি তিতাস নদীতে বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন বুধন্তি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এমরানুল ইসলাম, ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান ও স্থানীয় খাবির রহমান।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, “তিতাস নদীর বালু ও সোনাই নদীর পাড়ের মাটি কেটে নেওয়ায় উপজেলার কৃষকদের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব অব্যাহত থাকলে কৃষকদের ফসলি জমি পানি ডুবে যাবে। ফলে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”
ওই গ্রামের কৃষক সৈয়দ আলীর স্ত্রী বৃদ্ধ জাহানারা বেগম বলেন, “বালু নিলে আমার জমি ভেঙে পড়ে যাবে। আমি কী খামু, কেমনে বাঁচামু। আমি জান দিতে রাজি আছি, বালু না।”
একই গ্রামের হাজী আবদুর রহমান বলেন, “ইউনিয়নের একটা কুচক্রী মহল বিএনপির নাম বেইচা তিতাস নদী থেকে বালু উত্তোলন করতাছে। আমাদেরকে প্রশাসন দিয়া হয়রানি করতাছে। বুধন্তির চমক মিয়া, মিজানুর, সোহেল, ইসলামপুরের রাসেল, হেলাল আসাদ, আলীনগর থেকে রাষ্টু বালু তুলতেছে।”
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, “আমাদের কোনো স্বার্থ ও ব্যবসাও না। ছয় লেনের কাজের জন্য পিডিএল নামের একটি কোম্পানি বালু উত্তোলনের আবেদন করেছে, রাস্তার জন্য বালু প্রয়োজন। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান বালু উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছে।”
তিনি বলেন, “জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে দুটি পক্ষ কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছে। একটি পক্ষ আমাদেরকে এটির সঙ্গে জড়িয়ে ঘায়েল করতে চাচ্ছে। নদী, জমি, কাজ কোনোটিই আমাদের না, কিন্তু আমাদের জড়ানো হচ্ছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা বলেন, “মহাসড়কের কাজের জন্য পিডিএল নামের একটি কোম্পানি আবেদন করে সেখান থেকে বালু উত্তোলন করছে। আর গ্রামবাসীর কোনো আবেদন বা লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে করেনি। আর জেলা প্রশাসন থেকে অভিযোগের কোনো অনুলিপি আমাদের কাছে আসেনি।”