Published : 07 May 2025, 01:54 PM
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র গাজী আক্তারুল ইসলামকে পিটিয়ে এলাকাছাড়া করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে।
জেলা বিএনপির নবগঠিত সার্চ কমিটির বিরুদ্ধে মঙ্গলবার কলারোয়ায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে কলারোয়া পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব জি এম সোহেল এই হুমকি দেন বলে দাবি নেতাকর্মীদের।
বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র। তবে তিনি সদ্য গঠিত কলারোয়া সার্চ কমিটি কোনো দায়িত্বে নেই বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা।
ছাত্রদল নেতার বিতর্কিত এই বক্তব্যের ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
তারা বলেন, শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মিথ্যা মামলায় আক্তারুল সাড়ে চার বছর জেলে ছিলেন। ২০১১ এবং ২০১৫ সালে তিনি মেয়র নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগ তাকে পুরো মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে দেয়নি। আক্তারুল কলারোয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতিও ছিলেন।
মঙ্গলবারের বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদল নেতা সোহেল বলেন, “আজ আমি কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য দেব না। যারা এই কলারোয়ার নব রাজনীতির সূচনা করতে যাচ্ছে, ডিমের কুসুম থেকে বের হয়ে ৫ অগাস্ট পরবর্তী জেলখানা থেকে এসে যারা এই কলারোয়ায় আওয়ামী মার্কা রাজনীতি পরিচালনা করতে যাচ্ছেন।
“দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলে দিতে চাই, কলারোয়া ছাত্রদল কলারোয়ার সাবেক মেয়রকে প্রতিরোধ করার জন্য যথেষ্ট। ছাত্রদল যদি মনে করে আপনাকে (আক্তারুল ইসলাম) পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে কলারোয়া থেকে বিতাড়িত করে দেবে ইনশাআল্লাহ।”
আক্তারুল ইসলাম নয় বছর মেয়র থাকাকালীন বিএনপির নেতাকর্মীদের কী উপকার করেছেন জানতে চেয়ে সোহেল বলেন, “আমার নেত্রী, আমার মা খালেদা জিয়ার নামে সে একটি ব্যানার ধরেছে? তার নেতাকর্মীরা ধরেছে? বিগত আন্দোলনে সাবেক মেয়রের নেতাকর্মীরা কলারোয়ার কোথাও কোনও অবস্থান নিয়েছিল?”
ছাত্রদল নেতার অভিযোগ, “কলারোয়ার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলেমিশে ঠিকাদারি ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। আমরা কিন্তু সবকিছুই জানি। দেশ নায়ক তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে আমরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। আমরা কিন্তু এতোটা ধৈর্যশীলও না।
“ওই কালোবিড়াল কলারোয়ার নব রাজনীতির কুলাঙ্গার। ওই স্বপনের সঙ্গে আঁতাত করে সবশেষ কলারোয়া পৌরসভার ভোটে নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কলারোয়াবাসী সেই ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে লাল কার্ড দেখিয়েছিল। সময় আছে, সঠিক পথে ফিরে আসুন। বাবা এবং সন্তানের পার্থক্য, অভিজ্ঞতার পার্থক্য বুঝতে চেষ্টা করেন। নতুবা পিটিয়ে কলারোয়া থেকে ছাড়িয়ে (বের করে) দেব।”
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবু জাহিদ ডাবলু বলেন, “একজন ছাত্রদল নেতা বিএনপি নেতাকে এভাবে বলতে পারে না। সে সীমা লঙ্ঘন করেছে। চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।”
কেউ সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
ছাত্রদল নেতার এই বক্তব্যকে দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছেন কলারোয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় দল যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা মেনে নেওয়া হবে।”