Published : 08 Jul 2024, 12:29 AM
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে লালমনিরহাটে আবারও বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি।প্লাবিত হয়েছে তীরবর্তি নিম্নাঞ্চলগুলো।
পানি উঠে পড়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এছাড়াও ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলের জমি, পুকুর। বাড়িঘর ছেড়ে অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বাঁধে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গত কয়েকদিন ধরে বিপৎসীমার নিচে তিস্তার পানি উঠা-নামা করছে। রোববার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২দশমিক ২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নদী উপচে পানি প্রবেশ করায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, ডাউয়াবাড়ি, গড্ডিমারী ও সিন্দুর্ণা, কালীগঞ্জের ভোটমারী, আদিতমারীর মহিষখোচা, দূর্গাপুর এবং সদর উপজেলার খুঁনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তি নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
এসব এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় ও রান্না করতে না পেরে কোনো রকমে শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করছেন তারা। নলকূপ ডুবে যাওয়ায় নিরাপদ পানির সংকটও তৈরি হয়েছে।
এদিকে পানির তোড়ে শনিবার বিকালে মহিষখোচার গোবর্দ্ধন-২ নম্বর স্পার বাঁধের সংযোগস্থলে ধস দেখা দিয়েছে। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করছে।
পাউবো লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টা এই অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। ফলে নিচু এলাকা প্লাবিত হবে। ধসে যাওয়া এলাকায় জরুরি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, জেলার ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। তবে এর মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ে পাঠদান প্রক্রিয়া বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মজিবর রহমান বলেন, জেলার দুইটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠলেও এখনও পাঠদান স্বাভাবিক রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, “পানিবন্দি মানুষের তালিকা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তালিকা পেলেই সহযোগিতা করা হবে।”
তিনি আরও জানান, এর মধ্যে পানিবন্দি মানুষজনের মাঝে ১০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ চলছে।