Published : 16 Nov 2024, 11:58 PM
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ব্যাটারি চুরির অভিযোগে মারপিটের পাঁচ দিন পর এক রিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে। মারপিটের পর ওই চালককে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল বলে দাবি স্বজনদের।
ঘটনার পাঁচ দিন পর শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান বলে জানান পাটগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পি এম মামুনুর রশিদ।
নিহত হাসানুর রহমান (২৯) পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জারকোট এলাকার প্রয়াত আশরাফ আলীর ছেলে।
১১ নভেম্বর বিকালে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ইউনুস আলীর বাসার একটি আইপিএসের ব্যাটারি চুরির ঘটনায় হাসানুরকে আটক করা হয়।
হাসানুরের স্ত্রী বিলকিস বেগমের দাবি, “ব্যাটারি চুরির অভিযোগে আমার স্বামীকে আটকের পর মারপিট করে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখেন ইউনুস আলীর ছেলে ও স্বজনরা। খবর পেয়ে তাকে ছাড়াতে গেলে, তারা আমাকেও মারপিট করেন।
“গুরুতর অবস্থায় হাসানুরকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাই। আজ সে মারা গেছে।”
এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে হাসানুরের প্রতিবেশীরা ইউনুস আলীর বাসা ও তার ছেলেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা দোকান বন্ধ করে সরে পড়েন।
হাসানুরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন বলেন, “আমার ভাশুর নাকি আইপিএসের ব্যাটারি বের করে গাড়িতে তুলেছে। ওই বাড়ির লোকজন তাকে মারপিট করেছে। হাসানুরের বুকের হাড় ভেঙে গেছে। এ হত্যার বিচার চাই।”
হাসানুরের ছোট ভাই আনিসুর রহমান বলেন, “আমার ভাই ঠাকুরবাড়িতে ভাড়া নিয়ে গেলে, কে বা কারা তার রিকশায় ব্যাটারি তুলে দেয়। নিয়ে আসার সময় ব্যাটারি চুরির সন্দেহে তাকে মারধর করেছে।”
মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনুস আলীর ছেলে ফারুক হোসেন বলেন, “বাসা থেকে ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পাড়ার লোকজন চিৎকার করে তাকে ধরে চড়-থাপ্পড় দিয়েছে। আমি তো অসুস্থ, হার্টের রোগী। তাকে (হাসানুরকে) মারপিট করি নাই।
“ঘটনাস্থলে ওর স্ত্রী এসেছিল। পাড়ার লোকজন পুলিশকে দিতে চেয়েছিল। আমরা ধমক দিয়ে হাসানুরকে তার স্ত্রীর হাতে তুলে দেই।”
পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ বলেন, “আমরা নিজেরাই ঘটনাটি জেনেছি। শুনেছি নিহতের স্বজনরা নাকি আইনি ব্যবস্থা নেবেন না, মীমাংসা করবেন। তবে তাদের বলেছি, আপনারা মীমাংসা করেন আর যাই করেন লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”