Published : 22 Aug 2024, 03:55 PM
তিন দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের মনু, কুশিয়ারা, জুড়ি ও ধলাইসহ সবকটি নদনদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধলই নদীর একাধিক বাঁধ ভেঙে কমলগঞ্জের ইসলামপুর, আদমপুর ও মাধবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম তলিয়ে গেছে। এছাড়া রাজনগর উপজেলার ভাংঙ্গার হাটে বাঁধ ও কদমহাটায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, মনু নদীর পানি কুলাউড়া রেল ব্রিজ এলাকায় ১২৮ সেন্টিমিটার ও চাঁদনীঘাট এলাকায় ১৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে জুড়ি নদীর পানি ১৯০ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠার পাশাপাশি জেলার মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ, রাজনগর, জুড়ি, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে পাকা আউশ ধান ও রোপা আমন ধানের ক্ষেত।
এদিকে বুধবার রাতভর মৌলভীবাজার শহরের বেড়িবাঁধে বালি ভর্তি বস্তা দিয়ে শহর রক্ষার চেষ্টা করেছেন কয়েকশত স্বেচ্ছাসেবী।
কমলগঞ্জ ইসলামপুর ইউনিয়নের ভান্ডারী গাওয়ের সালমান আহমদ বলেন, ধলই নদীর বাঁধের একাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। বাঁধের নতুন-পুরাতন ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্রায় সব রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এতে মানুষের ভোগান্তি চরমে।
এ অবস্থায় বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে ৪৬ বিজিবি শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ান। উদ্ধার তৎপরতা পাশাপাশি বিজিবির পক্ষ থেকে কমলগঞ্জের ভান্ডারী গাও-এ শুকনো খাবার দেওয়া হয়।
৪৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, ভারত থেকে আসা পানির স্রোতে বিজিবির বিওপি সংলগ্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সীমান্তবর্তী বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তাৎক্ষণিক তাদের কোম্পানি কমান্ডারদের নেতৃত্বে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়। একইসঙ্গে দুই দিন ধরে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে জামায়াতে ইসলামীও। এ ব্যাপারে জেলা জামায়েতে ইসলাম নায়েবে আমির আব্দুর রহমান বলেন, পানি ওঠার পর তাৎক্ষণিক তিন লক্ষ টাকার ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
তিনি বন্যার্তদের সাহায্যে বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও অনুরোধ করেন।