Published : 09 Oct 2024, 05:49 PM
হাজিরা বোনাস ও বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরের দুটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম জানান, বুধবার সকাল ৮টার দিকে নগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় যমুনা গ্রুপের একটি কারখানায় ও কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিচালা এলাকার পূর্বাণী গ্রুপের একটি কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিংয়ের শ্রমিকেরা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়ক অবরোধ করেন। আর পূর্বাণী কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন কারখানার সামনে।
গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। এখনও বিভিন্ন কারণে ছয়টি কারখানা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং কারখানার শ্রমিকরা সকালে শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দেন। পরে বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে কোনাবাড়ী কাশিমপুর সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।
খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ গিয়ে পৌছে শ্রমিকদের বোঝালে বেলা ১২টার দিকে তারা সড়ক থেকে সরে যায়। তখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা বলছিলেন, আশপাশের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হলেও কর্তৃপক্ষ তাদের হাজিরা বোনাস ও বেতন বৃদ্ধি করেনি এবং বাৎসরিক ছুটির (অর্জিত) টাকা পরিশোধের বিষয়ে কিছুই জানানি। দাবি মেনে না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
কোনাবাড়ি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, “যমুনা গ্রুপের যমুনা ডেনিম গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং কারখানার শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবিতে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল। পরে তারা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে। পরে তাদের বুঝিয়ে দুপুর ১২টার দিকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়।
“অপরদিকে পূর্বাণী গ্রুপের করিম টেক্সটাইলের শ্রমিকরা টিফিন বিল, বাৎসরিক (অর্জিত) ছুটির টাকা, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধিসহ ২৬ দফা দাবিতে মঙ্গলবার কারখানার অভ্যন্তরে সামনে বিক্ষোভ করে। ওইদিন তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বুধবার সকাল থেকে তারা ফের কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।”
তিনি বলেন, “এক পর্যায়ে তারা ঢাকা-টাঙ্গালই মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে আগে থেকে সেখানে উপস্থিত শিল্প পুলিশ তাদের উঠতে দেয়নি। পরে তারা কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী গিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে বসে শ্রমিকদের দাবির বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানের জন্য আলোচনা শুরু করে।”
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, “গত দুদিন ধরে পূর্বানী গ্রুপের করিম টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছে।”
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম বলেন, “যমুনা ও পূর্বাণী গ্রুপের শ্রমিকদের দাবিগুলো সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে। মালিকপক্ষ আন্তরিক, আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে। এছাড়া বিভিন্ন কারণে গাজীপুরের ছয়টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।”