Published : 02 Apr 2025, 08:21 PM
নেত্রকোণার খালিয়াজুরীর দুই ও কেন্দুয়ার এক এলাকায় জড়ানো সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে খালিয়াজুরীর পাঁচহাট ও লক্ষ্মীপুর গ্রাম এবং কেন্দুয়ায় বলাইশিমুল-ছবিলা গ্রামের মাঝখানে এসব সংঘর্ষ হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
আহতদের মধ্যে খালিয়াজুরীর পাঁচহাট গ্রামের সালাম মিয়া (৬২) ও মোস্তাকিম মিয়ার (২৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও একই গ্রামের সোগেরা আক্তার (২৪), পায়েম (৩২) ও শামীম চৌধুরীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের সংঘর্ষে আহতরা হলেন- আক্তার মিয়ার ছেলে ইমরান (৩২), আলু মিয়া (১৮), আক্তারের স্ত্রী ইদুমা (৫২), মুকশেদ মিয়ার ছেলে মুন্না (২২), মেহেদি হাসান (২৫), জালাল মিয়ার ছেলে রহমতুল্লাহ (১৮) ও প্রয়াত চান্দু মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া (৬০)।
দুই গ্রামের আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ কে ফজলুল হক।
কেন্দুয়ায় সংঘর্ষে আহতদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
পাঁচহাট গ্রামের সংঘর্ষ নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী গাজীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুন মিয়া বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামের শফিকুল মিয়া বস্তা ফেলে গ্রামের একটি রাস্তা বন্ধ করছিলেন। এ নিয়ে গ্রামবাসীর আপত্তি ছিল। রাস্তা বন্ধ না করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও নিষেধ করা হয়। এ অবস্থায় আজ দুপুরে শফিকুলের লোকজনের সাথে গ্রামের অন্যদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৩৪ জন আহত হন।”
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্মীপুর গ্রামে সাউন্ড বক্স দিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজানো নিয়ে জালাল মিয়া ও আক্তার মিয়ার ছেলেদের মাঝে বিবাদ হয়। জালাল মিয়ার ছেলেরা পাশের বাড়িতে রাত দশটার দিকে সাউন্ড বক্স বাজাতে থাকলে আক্তার মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া বাধা দেন। এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডারর এক পর্যায়ে আক্তার মিয়ার ছেলে জালাল মিয়াকে মারধর করেন। তাকে পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এর জেরে বুধবার দুপুরে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে ছয়জন আহত হন।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মকবুল হোসেন বলেন, “এই দুই সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলগুলোতে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন দুই গ্রামেই শান্ত অবস্থা বিরাজ করছে।”
এদিকে, কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “দুপুরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার নিয়ে উপজেলার বলাইশিমুল ও ছবিলা গ্রাবাসীর মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখানে ২০ জনের মত আহত হয়েছেন।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহতদের।
বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।