Published : 31 Jan 2025, 09:43 PM
রাজবাড়ী থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে বেরিয়ে নিখোঁজের একদিন পর ফরিদপুর সদর থেকে এক চালকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে লাশের সন্ধান পায় পরিবার।
শুক্রবার বিকালে উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর কাচারীরটেকের হাতেম মোল্যা পাড়ার একটি পুকুরপাড় থেকে লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান।
নিহত ফরহাদ প্রামানিক (২২) রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ছাত্তার প্রামানিকের ছেলে। তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
পরিবারের সদস্যরা জানান, এক বছর আগে বিয়ে করেছেন ফরহাদ। তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। বৃহস্পতিবার বিকালে ফরহাদ বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হন। রাতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তার মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পায়। রাতভর তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন স্বজনরা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে ওই এলাকার শেফালী বেগম ছাগল নিয়ে মাঠে যান। এ সময় তিনি মাঠে একটি মোবাইল পেয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে মোবাইলটি চালু করলে ফরহাদের পরিবারের লোকজন ফোন করেন।
ফরহাদের মামা মোক্তার খাঁন বলেন, “সকাল ৯টার দিকে মোবাইল খোলা পাওয়া যায়। ফোন করা হলে একজন নারী রিসিভ করে জানান, এই এলাকায় (ফরিদপুর) মোবাইলটি পেয়েছেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসি।
“এরপর মোবাইল যেখানে পাওয়া গেছে তার আশপাশে খুঁজতে থাকি। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে পুকুরের পাশে ফরহাদের প্যান্ট পাওয়া যায়। সেখানে খুঁজতে থাকলে কচুরিপানা দিয়ে ঢাকা অবস্থায় ফরহাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়।”
ফরহাদের বাবা ছাত্তার প্রামানিক বলেন, “এক বছর আগে বিয়ে করেছিল ছেলেটা। নতুন একটি রিকশা কিনে গোয়ালন্দ এলাকা দিয়ে চালাতে শুরু করে। আমার ছেলের কোনও শত্রু নেই। ওরে মেরে রিকশাটি নিয়ে গেছে। ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই।”
ফরিদপুরে একের পর এক রিকশা ছিনতাই করে খুন হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় চালকেরা। মৃতদেহ পাওয়ার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রিকশাচালক মো. ইউনুস বেপারী। তার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্কের ছাপ দেখা গেছে।
তিনি বলেন, “এভাবে চালকদের মেরে রিকশা নিয়ে গেলে আমরা চলব কীভাবে। দিনরাত মাথার ঘাম পায়ে ফেইল্যা রিকশা চালাইয়্যা যে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে বাইচ্যা থাকব সেই কায়দা এহন আর নাই। কহনতে (কোথা থেকে) ধইর্যা মাইর্যা ফেলবে, তার ঠিক আছে নাকি।”
ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, রিকশা ছিনিয়ে নিতে ফরহাদকে গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।