Published : 08 Mar 2025, 05:11 PM
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধায় দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে একটি রেলওয়ে সেতুর সংস্কার কাজ ২১ দিনেও শুরু করা যায়নি। ফলে এই পথে দিনে-রাতে ২৫টির মত ট্রেন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হিলির সীমান্ত সংলগ্ন ধরন্দা গ্রামের পাশের রেলসেতুটির সংস্কার কাজে বাধা দেয় বিএসএফ। এরপর বিজিবি-বিএসএফের দফায় দফায় বৈঠক হলেও মেলেনি সমাধান।
হিলি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রউফ বলেন, “১৮৭৮ সালে নির্মিত সেতুটির স্থায়িত্ব কমে এসেছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ব্রিজটির সংস্কার করা জরুরি।”
ধরন্দা গ্রামের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “সপ্তাহ তিনেক আগে আমাদের ধরন্দা গ্রামের কয়েক গজ পশ্চিমে সীমান্তবর্তী রেলওয়ে ব্রীজের সংস্কার কাজ শুরু হয়। শ্রমিকরা সেখানে ইট-বালু দিয়ে কাজ করা শুরু করার পর বিএসএফ কাজ বন্ধ করে দেয়।
“বিএসএফ কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর এখনও সেখানে কেউ কাজ করতে আসেনি। ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতুর উপর দিয়েই দিন-রাত ট্রেন চলাচল করছে। তবে, রেলের বড় কর্মকর্তা এবং বিজিবির কর্মকর্তাদের সেখানে পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।”
হিলি রেলস্টেশনের টাইম কিপার আরাফাত রহমান বলেন, “ব্রিজের পাশে পাথর দিয়ে বেলাস প্রোটেকশন দেওয়ার সময় বিএসএফ বাধা দেয়। পরে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল বৈঠক করে কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই কাজও বন্ধ আছে।”
হিলি রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জয়ন্ত কুমার দাস, “এই পথ দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, নীলফামারী ও পঞ্চগড়গামী ২৫টির মত লোকাল ও দ্রুতগামী ট্রেন চলাচল করে। সেগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। তাই ব্রিজটি তাড়াতাড়ি সংস্কার করা প্রয়োজন “
হিলি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী আবদুর রউফ বলেন, প্রায় দেড় শত বছরের পুরানো ব্রিজটির নিচের অংশে পাথর সরে দেবে যায়। একারণে রেলওয়ে বিভাগ থেকে সংস্কার কাজ করার উদ্যোগ নেয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকরা এই সংস্কার কাজ শুরু করতে আসলে কোনো কারণ ছাড়াই ভারতের হিলির বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা এতে বাধা দেয়। এর ফলে কাজ বন্ধ করে শ্রমিকরা চলে আসে।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ আমলের সেতুটি এর আগেও সংস্কার করা হয়েছে। তখন কোনো বাধা আসেনি।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি হিলি বিজিবি ক্যাম্পে জানানো হলে তারা বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে। এরপর বিজিবির পক্ষ থেকে কাজ শুরু করার কথা বলে। কিন্তু কাজ করতে গেলে বিএসএফ বাধা দিচ্ছে। এ কারণে শ্রমিকেরা সেখানে কাজ করতে চাচ্ছে না। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টি বিজিবিকে আবারও জানানো হয়েছে।
জয়পুরহাট ২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ নেওয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে যে কোনো কারণে আমরাও বাধা দিতে পারি, তারাও পারে। কিন্তু কী কারণে দিল সেই প্রশ্ন রেখে বিএসএফকে জানিয়েছি।
“তারা বলেছে হাইকমান্ডকে জানিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানাবে। এখনও বিষয়টি জানায়নি তারা, তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আশা করছি অচিরেই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে এবং ব্রিজের কাজ শুরু হবে।”
পুরানো খবর
দিনাজপুর সীমান্তে রেল সেতুর সংস্কার কাজে বিএসএফের বাধা