Published : 28 May 2025, 07:15 PM
জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে ‘বেকসুর’ খালাসের প্রতিবাদে মশাল মিছিলের সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই পক্ষই সংবাদ সম্মেলন করে একে-অপরকে দোষারূপ করেছে।
বামেদের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য সমমনাদের ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ ঘটনার পরদিন বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে।
বেলা ১১টায় শাহবাগবিরোধী ঐক্য এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। এ সময় শাহবাগবিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, ছাত্র মিশনের সদস্যসচিব জসিম রানা, সাবেক সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদ, ছাত্র মিশনের আহ্বায়ক জি এ সাব্বির, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মাহফুজার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সংগঠক তারেক আশরাফ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আলিফ, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিসার্চ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
বামেদের সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে আজহারকে মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট মশাল মিছিলের আয়োজন করে। ওই সময় ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বারবার তাদের জড়ো হওয়ার স্থানের আশপাশে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। সংঘর্ষ এড়াতে তাদের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর রাত সোয়া ৮টায় মিছিল শুরু করে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট।
“পরে ইসলামী ছাত্র শিবির, ছাত্র মিশনসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে প্রায় ২০০ জনের একটি দল গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ইট-পাটকেল, চেয়ার ও লাঠি দিয়ে তারা আঘাত করে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল বডির কাছে গেলে তারা এটিকে ‘সাধারণ মারামারি’ বলে চালিয়ে দেয়। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। প্রশাসন আগের ফ্যাসিবাদী আমলের ধারাবাহিকতায় এখন শিবিরের পক্ষ নিচ্ছে।”
এর আগে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরিবহন চত্বরে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা। তখন মশাল মিছিল থেকে কিছু ব্যক্তি ‘রাজাকার’ ও ‘জামায়াত-শিবির’ বলে তাদের উত্ত্যক্ত করেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম বলেন, “বামপন্থি ছাত্ররা পরিকল্পিতভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। আমরা কোনো হামলা করিনি। বরং ওরাই হামলা চালিয়ে এখন নিজেদের ‘ভিকটিম’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। ছাত্রশিবির আমাদের কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু সংঘর্ষে তারা জড়িত নয়।”
হামলার পর উভয় পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “আমি তখন ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তবে আমরা দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ পর্যালোচনা করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ নয়। তাই সবাই নিজ নিজ মতাদর্শ অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করতে পারবে। তবে কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না।”
রাবিতে বাম জোটের মিছিলে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে’ শিবিরের হামলার অভিযোগ