বরিশালে ‘না জানিয়ে’ বাছুর বিতরণ করায় বিএনপি নেতাদের হট্টগোল

বরিশালের বাবুগঞ্জে জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় জেলেদের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণের সময় হট্টগোল করেছেন বিএনপি নেতারা। তাদের বাধায় বিতরণ কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়।

পরে বিএনপি নেতাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সাতটি বাছুর বিতরণ করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত বাবুগঞ্জ উপজেলা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে বলে বাবুগঞ্জ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এএফএম নাজমুস সালেহীন জানান।

তিনি বলেন, “ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানে উপজেলার ৮০ জন জেলের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়।

বিতরণ করেন বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ। তবে তিনি ৪৮টি বাছুর বিতরণ করে চলে যান। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা এসেছিলেন।”

“তখন একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।”

এ জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, “তালিকা নাম থাকা চারজন জেলে আসেননি এবং তিনজনের বিরুদ্ধে আপত্তি থাকায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। পরে নতুন করে সাতজন প্রকৃত জেলের মধ্যে বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, বাছুর বিতরণের সময় উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক, বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য খোকন প্যাদা, চাদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা রুবেল সরকার ও নান্টু জমাদ্দারসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা এসে হট্টগোল করেন।

তারা এসে মৎস্য কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেন- “গরু দেওয়ার বিষয়ে কেন জিজ্ঞেস করেননি।”

বিএনপি নেতারা মৎস্য কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, তারা দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন। এখনো তাদের লোককে বারবার বঞ্চিত করা হচ্ছে।

তারা অভিযোগ করেন, মৎস্য কর্মকর্তা এর আগে জামায়াত নেতাদের নিয়ে জেলে কার্ড করেছেন। বিএনপির লোকদের কাছেও ভিড়তে দেন না।

এসময় মৎস্য কর্মকর্তাকে ‘আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা’ হিসাবে আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতারা বলেন- “আপনি আওয়ামী লীগের লোকের মধ্যে গরু বিতরণ করছেন। আপনি খারাপ লোক। “

এ সময় মৎস্য কর্মকর্তাকে অফিস ছেড়ে চলে যেতেও বলেন বিএনপি নেতারা।

পরে বিএনপি নেতাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সাত জনকে বকনা বাছুর দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে এই ঘটনার ৪৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, “গরু বিতরণ নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জানতে চাইলে দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক বলেন, “একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেটা সমাধান হয়েছে।”