Published : 19 Apr 2025, 02:28 PM
রাজশাহী নগরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নওগাঁ সদর এলাকার আড়ারাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ।
এর আগে শুক্রবার বিকালে রাজশাহী নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে মো. নান্টু (২৮), তার সহযোগী একই এলাকার আব্দুস সাত্তার মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (২৮) এবং একই এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে রুমেল হোসেন (২৫)।
এর আগে বুধবার নগরের তালায়মারি শহীদ মিনার এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাবা আকরাম হোসেনকে (৫২) পিটিয়ে হত্যা করেন কয়েক যুবক।
ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার নিহতের ছেলে হাসান ইমাম সাতজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
আসামিরা হলেন- মো. নান্টু, মো. বিশাল (২৮), খোকন মিয়া, তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) এবং মো. শিশির (২০)। তারা তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার বাসিন্দা।
শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ বলেন, মামলার পর থেকে র্যাবের একটি দল আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে রাত ৮টার নওগাঁ সদরে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি নান্টু এবং তার সহযোগী তিন নম্বর আসামি খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সেখানে তারা এক ভ্যান চালকের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাজশাহী থেকে ওই ভ্যানে করে তারা সেখানে পালিয়ে যান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের বোয়ালিয়া মডেল থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে শুক্রবার বিকালে নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন রুমেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার রুমেল মামলার প্রধান আসামি নান্টুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, রুমেল এজাহারভুক্ত না হলেও, তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আগেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে একটি মামলা রয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, কিছুদিন আগে প্রধান আসামি নান্টু তার স্ত্রীকে মারধর করেন। নান্টুর স্ত্রীর আত্মীয় হওয়ায় আকরাম হোসেনের স্ত্রী এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নান্টু তার পরিবারকে ক্ষতির হুমকি দেন এবং তার লোকজন দিয়ে আকরামের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন।
বুধবার বিকালে প্রাইভেট পড়ে বাসায় যাওয়ার পথে আকরামের মেয়েকে গালিগালাজ করেন নান্টু। এ নিয়ে আকরাম প্রতিবাদ জানিয়ে নান্টুর পরিবারের কাছে গেলে তারা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো হামলা চালায়।
রাত ১০টার দিকে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় আকরাম ও তার ছেলেকে ইট দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। এ সময় ইট দিয়ে আকরামের মাথা থেঁতলে দেয় হামলাকারীরা।
গুরুতর অবস্থায় আকরামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান। আকরাম পেশাদার বাসচালক ও রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।