Published : 10 Jan 2024, 11:55 AM
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় চুরির অপবাদ দিয়ে এক নির্মাণ শ্রমিককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
নির্যাতনের একটি ভিডিও গত শুক্রবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
গত বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়া এলাকায় ময়নামতি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শ্রমিক আল আমিন (৩২) ওই এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আল আমিন।
গত চারদিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
এদিকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে নির্যাতনকারীরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে দেখা যায়- কয়েকজন মিলে আল আমিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। এ সময় তিনি পানি পানি বলে চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
হাসপাতালে আল আমিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি অভিযোগ করেন, শুধু লাঠিপেটাই নয়, প্লায়ার্স দিয়ে তার বাম হাতের একটি আঙুলের নখও তুলে ফেলা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি আঙুলের নখ তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বারপাড়া এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আশিক ও হাফিজের পাকা ঘর নির্মাণে শ্রমিকের কাজ করেন আল আমিন। এতে তাকে পারিশ্রমিক হিসেবে ৬০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও একশ’ টাকা কম দেওয়া হয়। তখন ওই টাকা দাবি করলে আশিক ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। পরে আল আমিন ৫০০ টাকা নিয়েই চলে যান। কিন্তু আশিক তার নির্মাণ কাজের জন্য আবারও আল আমিনের কাছে যান। আল আমিন প্রথমে রাজি না হলেও পরে কাজে যেতে রাজি হন।
থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, আল আমিনকে বাড়ি নিয়ে নির্মাণ যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন আশিক। এক পর্যায়ে আশিকের নেতৃত্বে সজল ও নয়নসহ ওই এলাকার কয়েকজন এসএস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার হাতের তিনটি আঙুল থেঁতলে দেওয়া হয়। এ সময় হাফিজের হাতে থাকা লোহার প্লায়ার্স দিয়ে হাতের আঙুলের নখ তুলে ফেলে এবং জোর করে চুরির স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
আল আমিন বলেন, হাসপাতালে আসার পর থেকে নির্যাতনকারীরা ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে গুম ও হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।
এ ঘটনায় তিনি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতনকারীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে, ভিডিও ভাইরাল ও থানায় অভিযোগ দেওয়া হলে নির্যাতনকারীরা এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দেন। এজন্য তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ভিডিও দেখে আসামিদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে।
[প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক]