ইংলিশ ফুটবল
Published : 11 May 2025, 03:56 PM
পয়েন্ট তালিকার তলানির দলের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় হাতছাড়া যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না রুবেন দিয়াস। হতাশা আর ক্ষোভে প্রতিপক্ষের দিকেই তীর ছুঁড়লেন ম্যানচেস্টার সিটির এই মিডফিল্ডার। সাউথ্যাম্পটনের ‘অতি রক্ষণাত্মক’ খেলার কৌশল নিয়েই যত আপত্তি তার।
মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে টানা বাজে পারফরম্যান্সে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে গত চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। তারপরও কিছু প্রাপ্তির সুযোগ এখনও আছে দলটির। সাম্প্রতিক সময়ে ছন্দে ফেরার আভাস দেওয়া সিটির সুযোগ আছে এফএ কাপ জিতে মৌসুম শেষ করার এবং লিগের শীর্ষ পাঁচে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেওয়ার।
কিন্তু শনিবার প্রিমিয়ার লিগে সাউথ্যাম্পটনের মাঠে খেলতে নেমে অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল। প্রথম ৩৫ রাউন্ডে মাত্র দুটিতে জয়ী ও ১১ পয়েন্ট পাওয়া দলটির বিপক্ষে সহজ জয়ই হয়তো প্রত্যাশা করছিল সিটি; কিন্তু ম্যাচের শুরু থেকেই ভুগতে থাকে তারা। বিশেষ করে প্রথমার্ধে তাদের আক্রমণগুলো ছিল একেবারেই ধারহীন।
দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময় থেকে অবশ্য বেশ গুছিয়ে ওঠে সিটি। একের পর এক আক্রমণে অনেক সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু ঘর সামলে পাল্টা আক্রমণ শাণানোর খুব একটা চেষ্টাও করতে দেখা যায়নি সাউথ্যাম্পটনকে। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য সমতায় শেষ হয় লড়াই।
ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষের রক্ষণাত্মক কৌশল নিয়েই মূলত বেশি বিরক্তি ঝরল দিয়াসের কণ্ঠে।
“এটা হতাশাজনক। লিগে এই মূহূর্ত থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং এমন একটা দলের বিপক্ষে খেলাটা খুব হতাশার। তারা এমনকি খেলার চেষ্টাই করেনি। পুরোটা ম্যাচে তারা কেবল সময়ই নষ্ট করেছে।”
“আমার এমনকি মনেও হয়নি যে, তারা খেলতে চেয়েছে অথবা জিততে চেয়েছে। তারা কেবল নিজেদের (ডি-বক্সের আশেপাশে) সময় নষ্ট করেছে। তবে যা হওয়ার হয়েছে। আমরা সবরকমভাবে চেষ্টা করেছি। আমরা সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু গোল করতে পারিনি। যা হওয়ার, হয়েছে। আমরা গোল করতে পারিনি, তাই এই ড্র নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।”
দিয়াসের কথার যথার্থতা ম্যাচের পরিসংখ্যানেও মেলে। পুরো ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে যেখানে ২৬টি শট নিয়ে পাঁচটি লক্ষ্যে রাখতে পারে সিটি, সেখানে সাউথ্যাম্পটন শটই নিয়েছে মাত্র দুটি, তাও লক্ষ্যভ্রষ্ট।
তবে ম্যাচের শেষভাগে গ্যালারির চিত্র দেখলে বোঝার উপায় ছিল না যে, সাউথ্যাম্পটন পুরোটা মৌসুম জুড়েই ভুগেছে। সিটির একেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছিল আর উল্লাসের শব্দ ভেসে আসছিল সাউথ্যাম্পটনের সমর্থকদের থেকে।
অবশ্য এর একটা কারণও ছিল। প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বাজে ফল নিয়ে মৌসুম শেষ করার বিব্রতকর রেকর্ড ছোঁয়ার শঙ্কা ছিল সাউথ্যাম্পটনের সামনে, সিটির মতো দলকে রুখে দেওয়ার পথে সেটা কাটিয়ে উঠেছে তারা।
প্রিমিয়ার লিগে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বাজেভাবে আসর শেষ করা দল ডার্বি কাউন্টি, ২০০৭-০৮ মৌসুমে ১১ পয়েন্ট নিয়ে। সেটাকে ছাড়িয়ে সাউথ্যাম্পটনের পয়েন্ট হলো ১২।
আর এই হোঁচটের পর এক ধাপ নিচে নেমে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে সিটি। ৩৬ ম্যাচে ১৯ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে গুয়ার্দিওলার দল। তাদের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে এক ম্যাচ কম খেলা আর্সেনাল।
সমান ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানের দল নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও চেলসি মুখোমুখি হবে রোববার। এই ম্যাচের বিজয়ীরা সিটিকে টপকে উঠে যাবে তিনে।