Published : 07 May 2025, 12:59 PM
গোল করার পর খ্যাপাটে উদযাপনের এক পর্যায়ে গ্যালারির রেলিং বেয়ে উপরে উঠে গেলেন দাভিদে ফ্রাত্তেসি। কে বলবে, পুরোপুরি ফিট না থাকায় ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনই করতে পারেননি তিনি! এই মিডফিল্ডার তো বটেই, শতভাগ ফিট ছিলেন না ম্যাচের প্রথম গোলটি করা লাউতারো মার্তিনেসও। স্মরণীয় জয়ের পর ইন্টার মিলানের কোচ সিমোনে ইনজাগি বললেন, এমন অনেক প্রতিবন্ধকতা জয় করেছে তার দল মনের জোর দিয়ে।
সাত গোলের রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ আর দুই লেগ মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের স্মরণীয় লড়াই জিতে ফাইনালে পা রেখেছে ইন্টার মিলান। প্রথম লেগ ৩-৩ সমতায় শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে হারায় তারা ৪-৩ গোলে।
সান সিরোয় মঙ্গলবার ম্যাচের ২১তম মিনিটে ইন্টার মিলানকে এগিয়ে দেন মার্তিনেস। প্রথমার্ধের শেষ দিকে পেনাল্টি গোলে দলকে আরও এগিয়ে দেন হাকান চালহানোলু। তবে দ্বিতীয়ার্ধে এরিক গার্সিয়া ও দানি ওলমোর গোলে সমতা ফেরায় বার্সেলোনা।
৮৭তম মিনিটে রাফিনিয়া যখন এগিয়ে দেন বার্সেলোনাকে, ইন্টারের বিদায় মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু নাটকীয় লড়াইয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে ৯৩তম মিনিটে সমতায় ফেরান ফ্রান্সেসকো আচের্বি। পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রায় ১৯ বছরে ৩৭ বছর বয়সে এসে ইউরোপিয়ান মঞ্চে প্রথম গোলের স্বাদ পেলেন এই ডিফেন্ডার।
রোমাঞ্চের বাকি ছিল তখনও। অতিরিক্ত সময়ে গোল করে আবার ইন্টারকে এগিয়ে দেন বদলি নামা দাভিদে ফ্রাত্তেসি। সেটিই শেষ পর্যন্ত গড়ে দেয় ব্যবধান।
অথচ এই ফ্রাত্তেসির মাঠে নামা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। দলের প্রস্তুতি আদর্শ ছিল না অনেক দিক থেকেই। জিততে পেরে তাই উচ্ছ্বসিত কোচ ইনজাগি।
“দারুণ নজির মেলে ধরেছে ছেলেরা। ছেলেদেরকে বলেছিলাম এই বিশ্বাস রাখতে যে, আমরা বার্সেলোনাকে আটকাতে পারব। কাজটা সহজ ছিল না, তবে আমরা পেরেছি।”
“লাউতারো এক সপ্তাহ মাঠের বাইরে ছিল, ডামফ্রিস ও থুরাম ফিরেছে দুই সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার পর, ফ্রাত্তেসি গতকাল অনুশীলন করতে পারেনি। ওরা কেউ আজ শতভাগ ফিট ছিল না। প্রতিটি প্রতিকূলতা জয় করার জন্য হৃদয় দিয়ে লড়তে হয়েছে আমাদের।”
প্রতিপক্ষের প্রশংসাও করছেন ইনজাগি। এই মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা বার্সেলোনাকে যেভাবে হারিয়েছে ইন্টার, সেই আনন্দ দলকে পুরোপুরি উদযাপন করতে বলছেন কোচ।
“বার্সেলোনার প্রশংসা করতে হবে আমাদের, তারা সত্যিই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। দারুণ খেলেই জিততে হয়েছে আমাদের। আমার দলের পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। দুই লেগে দুটি অসাধারণ পারফরম্যান্স মেলে ধরেছে তারা। ফাইনালে পৌঁছতে এমন কিছুই প্রয়োজন ছিল।”
“ওদের কোচ হতে পেরে আমি গর্বিত। ছেলেরা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে খেলেছে। এই মাঠে এমন সাফল্য উপভোগ করা তাদের অধিকার। সমর্থকদের সামনে এই জয় তাদের উপভোগ করা উচিত।”
এই নিয়ে ইনজাগির কোচিংয়ে তিন মৌসুমের মধ্যে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল ইন্টার মিলান। ২০২৩ আসরে ফাইনালে তারা হেরে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটির কাছে। তবে এবারের বাস্তবতা ভিন্ন বলেই মনে করেন ইন্টার কোচ।
“দুই বছরে এই দল আরও পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের পথচলা, যেভাবে আমরা এই মৌসুমে এগিয়েছি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে।”
“চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল সবসময়ই দুর্দান্ত কোনো দলের বিপক্ষে হবে। যে দলের সঙ্গেই হোক, দারুণ এক ম্যাচ হবে।”
ফাইনালে ইন্টারের প্রতিপক্ষ পিএসজি নাকি আর্সেনাল, জানা যাবে বুধবার।
ট্রেবল স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার পর ক্লাসিকোয় তাকিয়ে বার্সেলোনা
কান্নাভেজা বিদায়ের পর ইয়ামাল শোনালেন ট্রফির প্রতিশ্রুতি
'অবিশ্বাস্য ম্যাচ, স্পেশাল সেভ', সমের যেন সান সিরোর মহাপ্রাচীর