এশিয়ান কাপ বাছাই
Published : 10 Jun 2025, 10:46 PM
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটের ঘটনা। বক্সে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে ফাউল করেন সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডার ইরফান নাজিব। পেনাল্টির আবেদন করল বাংলাদেশ, কিন্তু সাড়া মিলল না রেফারির। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যা বললেন, সেখানে তিনি যেমন পুরোপুরি নিশ্চিতও নন, আবার বললেন, এটা পরিষ্কার পেনাল্টি!
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডে মঙ্গলবার ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে হারে বাংলাদেশ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়া দলকে ম্যাচে ফেরার উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন রাকিব হোসেন, কিন্তু পরে আর সমতাসূচক গোল পায়নি দল। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় কাবরেরা ওই পেনাল্টি বঞ্চিত হওয়া, ম্যাচের ফল নিয়ে জানান নিজের ভাবনা।
“ওই বিষয়টা (পেনাল্টি) আমাকে আবারও দেখতে হবে। বিশেষ করে…ওটা আমি দেখিনি, তবে আমার কাছে মনে হয় এটা পরিষ্কার (পেনাল্টি), ওই সময়ে আমরা যেভাবে খেলছিলাম, পুরোদমে আক্রমণ করছিলাম, আমি যদি ভুল না ভেবে থাকি, ২-২ হতে পারত ওই সিদ্ধান্ত পক্ষে এলে। তবে আমি পরিস্কার, যদিও আমি সেটা দেখিনি।”
“আমি মনে করি, তার (হামজার) হতাশা ছিল রেফারির বিরুদ্ধে। দলের প্রতি তার হতাশা ছিল না। যদি আপনারা ম্যাচের পরফরম্যান্স দেখেন, তাহলে আমি মনে করি, ২-২ ড্র হতো ন্যায্য ফল। আমি জানি, সবার প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, কিন্তু সেটা হয়নি। তাদের আক্রমণভাগে ভালো খেলোয়াড় আছে। দলীয় সামর্থ্য আছে। দুইটা কাছাকাছি মানের দলের মধ্যে টাইট ম্যাচ হয়েছে। আমি জানি না কি বলব (কি কারণে হেরেছি)।”
প্রথমার্ধের শেষ দিকে সন ইউ-ইয়াংয়ের গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইখসান ফান্দি। সিঙ্গাপুরের এই ফরোয়ার্ডকে আটকে রাখার ভাবনা মাঠে বাস্তবায়ন করতে পারেনি রক্ষণভাগ। কাবরেরার মনে হচ্ছে, ম্যাচের চাপ নিতে পারেনি দল।
“কঠিন ফল পেলাম, এটা হতেই পারে, তবে নিশ্চিতভাবেই এই ফল প্রত্যাশা করিনি আমরা। আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, ম্যাচও সেভাবেই শুরু হয়েছিল। খুবই প্রাণশক্তিতে ভরপুর হয়ে, উপরে প্রেসিং করে খেলছিলাম। এরপর আমরা কিছু ভুল করলাম। পরে প্রাণশক্তি হারিয়ে দমে গেলাম, চাপে পড়ে গেলাম। সংগ্রাম করতে হলো আমাদের। যে গোলটা আমরা হজম করলাম, সেটা এড়াতে পারতাম। দ্বিতীয়ার্ধেও গোল খেলাম। তবে আমি মনে করি, দ্বিতীয়ার্ধের খেলা আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। আমরা সাহসী ছিলাম। সুযোগ তৈরি করেছিলাম। ফল নিয়ে আমি হতাশ। তবে আমি মনে করি, আমরা ভালো ম্যাচ খেলেছি। তা সত্ত্বেও হেরেছি এবং আমাদের সেটা মেনে নিতে হবে।”
“দমে যাওয়ার কারণ...আমার মনে হয়, আমরা চাপের সাথে মানিয়ে নিতে পারিনি। কিছু সময় সিঙ্গাপুর আমাদের উপর যথেষ্ট আধিপত্য করেছে। আমরা তাদের মতো মানসম্পন্ন দলের বিপক্ষে সবসময় একইভাবে মানিয়ে নিয়ে খেলতে পারিনি। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। দ্বিতীয়ার্ধে আপনারও দেখেছেন আমরা আরও বেশি জমাট ছিলাম, তুলনামূলকভাবে প্রথমার্ধের চেয়ে ভালো ছিলাম। ঘুরে দাঁড়ানো গোলও পেলাম, কিন্তু সমতায় ফিরতে পারলাম না।”
ব্যবধান কমানো গোলটি করা রাকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন কাবরেরা। হামজা চৌধুরী, বাংলাদেশের হয়ে প্রথম খেলতে নামা শোমিত সোম, ফাহামিদুল ইসলামের খেলা নিয়েও খুশি কাবরেরা।
“রাকিব আমার কাছে সেরা স্ট্রাইকার। আমার কাছে বক্সে সে সেরা। বক্সে তার যে সামর্থ্য, আমি মনে করি, আপনি তার সাথে অন্য কারো তুলনা করতে পারেন না। রাকিবের মতো স্ট্রাইকার প্রতিপক্ষের জন্য কাজগুলো কঠিন করে তুলতে পারে, তবে এই মানের দল যখন ডিফেন্স করে নিচে নেমে, তখন কাজটা যে কারো জন্য কঠিন হয়ে যায়।”
“শিলংয়ের চেয়ে এই ম্যাচটা ম্যানেজ করা আমাদের জন্য বেশি কঠিন ছিল। ভারত আমাদের খেলার জায়গা দিয়েছিল দিয়েছিল, কিন্তু এই ম্যাচের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। হয়ত সে কারণে হামজার জন্য কাজগুলো কঠিন ছিল। তবে সে এনার্জেটিক ছিল, শোমিত প্রথমার্ধে একটু অস্বচ্ছন্দ্য ছিল, কিন্তু আমি মনে করি, তারা ভালো খেলেছে। ফাহামিদুল তার সেরা চেষ্টা করেছে। ভুটানের চেয়ে সিঙ্গাপুর শক্তিশালী দল। প্রথম ম্যাচে সে ভালো করেছিল। এ ম্যাচেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।”