নেশন্স লিগ
Published : 06 Jun 2025, 03:03 AM
প্রথমার্ধে তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল, দ্বিতীয়ার্ধে পরপর দুই মিনিটে আরও দুটি। ৫৫ মিনিটের মধ্যে চার গোলের ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্পেন। লড়াইটা তখন একপেশে। তবে হাল ছাড়ল না ফ্রান্স। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আশা জিইয়ে রাখল তারা, যদিও পেরে উঠল না। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালে উঠল শিরোপাধারী স্পেন।
স্টুটগার্টে বৃহস্পতিবার রাতে সেমি-ফাইনালে একপর্যায়ে ৫-১ গোলে এগিয়ে যায় লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। শেষ পর্যন্ত তারা জেতে ৫-৪ গোলে।
আগামী রোববার মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শিরোপা লড়াইয়ে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ২০২৪ ইউরো জয়ীরা।
স্পেনের জয়ে জোড়া গোল করেন বার্সেলোনার হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়ে আসা লামিনে ইয়ামাল। নিকো উইলিয়ামস, মিকেল মেরিনো ও পেদ্রি করেন একটি করে গোল। ফ্রান্সের হয়ে জালের দেখা পান কিলিয়ান এমবাপে, হায়ান শের্কি ও রান্দাল কোলো মুয়ানি, অন্যটি স্প্যানিশদের আত্মঘাতী।
ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি গোলে বেশি শট নেয় ফ্রান্স, তাদের ২৪ শটের ৯টি ছিল লক্ষ্যে। স্পেনের ১৬ শটের ৮টি লক্ষ্যে ছিল।
ফ্রান্সের বিপক্ষে টানা দুটি সেমি-ফাইনালে জিতল স্পেন। জার্মানিতেই গত বছরের ইউরোর শেষ চারে ২-১ গোলে জিতেছিল তারা। পরে ফাইনালে ইংল্যান্ডকে একই ব্যবধানে হারিয়ে জিতেছিল শিরোপা।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকে জমে ওঠে লড়াই। সপ্তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগটি পান এমবাপে। পিএসজির হয়ে সদ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী উসমান দেম্বেলের পাসে কাছ থেকে রেয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমন।
দ্বাদশ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি ডিফেন্ডার থিও এরনঁদেজের জোরাল শট ক্রসবারে লাগে।
অষ্টাদশ মিনিটে গোলরক্ষক বরাবর শট করেন স্পেনের ফরোয়ার্ড নিকো উইলিয়ামস। ২২তম মিনিটে আর ভুল করেননি তিনি। ডান দিক থেকে ইয়ামাল বক্সে খুঁজে নেন মিকেল ওইয়ারসাবালকে। জটলার ভেতর থেকে এই ফরোয়ার্ডের বাড়ানো বল জালে পাঠান ২২ বছর বয়সী উইলিয়ামস।
সেই রেশ থাকতেই ২৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেরিনো। এই গোলেও জড়িয়ে ওইয়ারসাবালের নাম। তার চমৎকার ফ্লিকে বক্সে বল পেয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলরক্ষক মাইক মিয়াঁকে পরাস্ত করেন আর্সেনাল মিডফিল্ডার।
৩১তম মিনিটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের নায়ক দিজিরে দুয়ের নিচু শট ফেরান সিমন। পরের মিনিটে এমবাপের শটও ব্যর্থ করে দেন আথলেতিক বিলবাও গোলরক্ষক।
৪৪তম মিনিটে ইয়ামালের ক্রসে বক্সে ওইয়ারসাবালের হেড পাসে চমৎকার ভলিতে ফ্রান্সের জালে বল পাঠান ডিন হাউসেন। তবে আক্রমণের শুরুতে রেয়ালের মাদ্রিদের নতুন এই ডিফেন্ডার অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি।
৫৪ ও ৫৫ মিনিটে আরও দুই গোল করে ম্যাচে চালকের আসনে বসে যায় স্পেন।
প্রথমে সফল স্পট কিকে ব্যবধান বাড়ান ইয়ামাল। বক্সে বার্সেলোনার উইঙ্গার নিজেই ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টি পেয়েছিল স্পেন। আর নিকো উইলিয়ামসের পাস বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে স্কোরলাইন ৪-০ করেন পেদ্রি।
৫৯তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান এমবাপে। বক্সে রেয়াল মাদ্রিদের তারকাকে পেদ্রো পোরো ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পেয়েছিল ফ্রান্স।
৬৭তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে আবার চার গোলের লিড পুনরুদ্ধার করেন ইয়ামাল। ডান দিক থেকে পেদ্রো পোরোর পাস বক্সে পেয়ে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে বুটের মাথা দিয়ে শট নেন ১৭ বছর বয়সী উইঙ্গার, গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে জালে যায় বল।
৭৯তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে আবার ব্যবধান কমান অভিষিক্ত হায়ান শের্কি। এমবাপের পাস বক্সের বাইরে ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের চমৎকার ভলিতে ঠিকানা খুঁজে নেন ৬৩তম মিনিটে বদলি নামা ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
৮৪তম মিনিটে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় আরেকটি গোল শোধ করতে পারে ফ্রান্স। প্রতিপক্ষের শট বক্সে ক্লিয়ারের চেষ্টায় নিজেদের জালে বল পাঠান স্পেনের ডিফেন্ডার দানি ভিভিয়ান।
পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে শের্কির ক্রসে হেডে ব্যবধান এক গোলে নামিয়ে আনেন কোলো মুয়ানি। বাকি সময়ে নাটকীয় কিছু আর করে দেখাতে পারেনি ফ্রান্স।