Published : 02 Jun 2025, 12:43 PM
দিয়েগো মারাদোনার প্রতি অনুরাগের কথা অনেকবারই বলেছেন নেইমার। আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বরের সঙ্গে ছেলেবলায় দেখা হওয়ার পর কতটা আলোড়িত ও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, সেসব অনেকবার শুনিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এবার মারাদোনার মতো হাত দিয়ে গোল করার চেষ্টা করে উল্টো অভিজ্ঞতা হলো তার। মাঠ ছাড়তে হলো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে।
ব্রাজিলিয়ান সেরি আ-তে সান্তোস ও বতাফোগোর ম্যাচের ঘটনা এটি। চোট কাটিয়ে দেড় মাস পর এই ম্যাচ দিয়েই শুরুর একাদশে ফেরেন নেইমার। প্রথমার্ধেই ফাউল করে একটি হলুদ কার্ড দেখেন তিনি।
হাত দিয়ে গোল করার ঘটনা ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে। সান্তোসের একটি আক্রমণে বতাফোগো গোলকিপার বল ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। উল্টো বল গিয়ে পড়ে ছুটে আসতে থাকা নেইমারের সামনে। তার শরীরে লেগে বল চলে যায় শুয়ে থাকা গোলকিপারের ওপর দিয়ে। নেইমার হেড করতেই হয়তো এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু পাশ থেকে বতাফোগোর একজন পা উঁড়িয়ে বল বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এর আগেই হাত দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন নেইমার।
সান্তোসের দর্শকেরা উল্লাসে মেতে ওঠেন গোল হয়েছে ভেবে। তবে বতাফোগোর ফুটবলার প্রবল প্রতিবাদে ঘিরে ধরেন রেফারিকে। নেইমার তখন মাথায় আঘাত পেয়ে বা আঘাত পাওয়ার ভঙ্গিতে শুয়ে আছেন মাটিতে।
হাত দিয়ে গোল করার ব্যাপারটি ধরতে পারেননি রেফারিও। নেইমারকে আরেকটি হলুদ কার্ড দেখান তিনি। ৩৩ বছর বয়সী তারকা ছুটে এসে রেফারিকে নানা কিছু বলতে থাকেন। তাতে কী আর লাভ হয়! মাঠ ছেড়ে যেতেই হয় তাকে।
ম্যাচে তখনও ছিল ০-০ সমতা। কিন্তু সান্তোস ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার ১০ মিনিট পর গোল করে বতাফোগো। সেই গোলেই তারা জিতে নেয় ম্যাচ।
এই ঘটনার জন্য ম্যাচের পর সামাজিক মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনা করেন নেইমার।
“আমি একটি ভুল করেছি, আমাকে ক্ষমা করুন। আজকে আমি যদি বাইরে চলে না যেতাম, নিশ্চিতভাবেই তিনটি পয়েন্ট পেতাম আমরা। ওই তিন পয়েন্ট না পাওয়ার দায় আমাকেই দিতে পারেন!”
এভাবে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার ম্যাচটি এই দফায় সান্তোসে তার শেষ ম্যাচও হতে পারে। ক্লাব বিশ্বকাপের আগে সান্তোসের আর একটি ম্যাচ আছে, যেটিতে নেইমার খেলতে পারবেন না এই কার্ডের কারণে। পরে ক্লাব বিশ্বকাপ শেষে যখন ব্রাজিলিয়ান লিগ আবার শুরু হবে, ততদিনে সান্তোসের সঙ্গে নেইমারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। নতুন চুক্তি না করলে এই জার্সিতে আর তাকে দেখা নাও যেতে পারে।
সৌদি আরবের আল হিলাল ছেড়ে গত জানুয়ারিতে সান্তোসে নাম লেখান নেইমার। শৈশবের ক্লাবে তার ফেরাকে ঘিরে এই ক্লাবে ও ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে ছিল আবেগের জোয়ার। কিন্তু এখানেও চোটের পর চোটে জর্জরিত হয়ে নিয়মিত মাঠেই ছিলেন না তিনি, পারফরম্যান্সও ছিল না খুব ভালো।
দলর অবস্থাও যাচ্ছেতাই। ১১ ম্যাচের স্রেফ দুটি জিতে আট পয়েন্ট নিয়ে ২০ দলের লিগে তাদের অবস্থান এখন ১৮তম।