ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
Published : 16 Jun 2025, 12:04 AM
একদিকে বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের সেরা দলগুলোর একটি, আরেকপাশে খেলাটি যাদের কাছে অনেকটা বিনোদনের উপলক্ষ, ফুটবলের ময়দানে যাদের ‘পার্ট-টাইমার’ বলাই যায়। মাঠের লড়াইয়ে তাই যা হওয়ার, তাই-ই হলো। ‘অ্যামেচার দল’ অকল্যান্ড সিটিকে নিয়ে ছেলেখেলা করল বায়ার্ন মিউনিখ।
সিনসিনাটির টিকিউএল স্টেডিয়ামে রোববার ১০-০ গোলের জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে পথচলা শুরু হলো বায়ার্নের। বদলি নেমে হ্যাটট্রিক করেন জামাল মুসিয়ালা। দুটি করে গোল করেন কিংসলে কোমান, টমাস মুলার ও মাইকেল ওলিসে। একবার জালে বল পাঠান সাশা বুয়ে।
সকাল হলেই অকল্যান্ড সিটির অনেক খেলোয়াড় দৈনন্দিন জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে পড়েন! কেউ রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, কেউ ছাত্র, কেউ বা শিক্ষক! কোচ ইভান ভিসেলিচের মতো দলের অনেক খেলোয়াড় এসেছেন বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে। পেশাদার ফুটবলের মাঝে এই দলের সবকিছুই অস্বাভাবিক, বিস্মিত করে।
ম্যাচ শুরু হতেই নিজেদের ডি-বক্সে ও এর আশেপাশে অবস্থান নেয় অকল্যান্ড সিটি। স্বাভাবিকভাবেই ঘর সামলানোর কৌশল নেয় তারা, যদিও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
বায়ার্নের গোল উৎসবের শুরু ষষ্ঠ মিনিটে; কর্নারে উড়ে আসা বল পেয়ে হেড পাস করেন জোনাথন টাহ এবং ফিরতি হেডে দলকে এগিয়ে নেন কিংসলে কোমান।
সেই যে শুরু হয় বায়ার্নের ঝড়, তা আর থামেনি। খানিক বাদে তিন মিনিটে আরও তিনবার জালে বল পাঠায় জার্মান ক্লাবটি।
১৮তম মিনিটে ফরাসি ডিফেন্ডার সাশা বুয়ে দুরূহ কোণ থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করার পর কাছ থেকে গোল করেন মাইকেল ওলিসে। আর ২১তম মিনিটে বাঁ পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন আরেক ফরাসি কোমান।
৪৫তম মিনিটে ওলিসের পাস ধরে স্কোরলাইনে নাম লেখান মুলার। আর বিরতির ঠিক আগে দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে ৬-০ করেন ফরাসি মিডফিল্ডার ওলিসে।
নিজেদের তুলনায় যোজন যোজন এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের সামনে ন্যূনতম বাধাও তৈরি করতে পারেনি অকল্যান্ড সিটি। প্রথমার্ধে বায়ার্ন যেখানে গোলের জন্য ১৫টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখে, সেখানে সিটি কোনো শটই নিতে পারেনি।
বিরতির পরও খেলায় ধারায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। একচেটিয়া চাপ ধরে রেখে, আক্রমণের জোয়ারে পুঁচকে প্রতিপক্ষকে ভাসিয়ে দেয় বায়ার্ন।
৬১তম মিনিটে হ্যারি কেইনের বদলি নামার ১২ মিনিটের মধ্যে দুটি গোল করেন মুসিয়ালা। মুলারের পাস ধরে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দলের সপ্তম গোলটি করার পর ৭৩তম মিনিটে পেনাল্টি শটে ব্যবধান আরও বাড়ান তরুণ জার্মান মিডফিল্ডার।
পুরো ম্যাচে ২৫ শতাংশের মতো সময় পজেশন রাখতে পারা অকল্যান্ড সিটি ৮০তম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নিতে পারে। ২৫ গজ দূর থেকে গোলরক্ষক বরাবর আঙ্গুসের ওই শটেই গ্যালারিতে করতালির ঢেউ ওঠে।
এরপরই হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসেন মুসিয়ালা। ৮৪তম মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের শটে দলের নবম গোলটি করেন ২২ বছর বয়সী ফুটবলার।
ক্যারিয়ারে পুরোটা সময় বায়ার্নে কাটিয়ে দেওয়া মুলার ৮৯তম মিনিটে কাছ থেকে দারুণ ভলিতে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন। মিউনিখের দলটিতে ৩৫ বছর বয়সী জার্মান ফরোয়ার্ডের এটাই শেষ টুর্নামেন্ট।