Published : 26 May 2025, 03:38 PM
ডিজিটাল উদ্ভাবনে বড় উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিটকয়েন মাইনিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ডেটা সেন্টার চালাতে প্রথম ধাপে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। যার লক্ষ্য দেশকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নেতৃতস্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।
আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আনতে সম্প্রতি ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বৈধ করেছে পাকিস্তান। এ বছরের মার্চে ‘পাকিস্তান ক্রিপ্টো কাউন্সিল’ বা পিসিসি তৈরি করেছে দেশটি, যার উদ্দেশ্য ব্লকচেইন প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সম্পদকে দেশের অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করা বলে প্রতিবেদনে লিখেছে পাকিস্তানের শীর্ষ দৈনিক ডন।
এ কাউন্সিলে অর্থমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে উদ্যোক্তা বিলাল বিন সাকিবকে নিয়োগ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
এক বিবৃতিতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, এ উচ্চাভিলাষী উদ্যোগটি পরিচালিত হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিপ্টো কাউন্সিল বা পিসিসি-এর নেতৃত্বে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। উদ্যোগের লক্ষ্য, “অতিরিক্ত বিদ্যুৎ কাজে লাগানো, উচ্চ প্রযুক্তির কর্মসংস্থান তৈরি, বিদেশ থেকে বড় অংকের বিনিয়োগ আনা ও সরকারের জন্য শত কোটি ডলারের আয় তৈরি করা।”
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব বলেছেন, এই কৌশলগত বিদ্যুৎ বরাদ্দ পাকিস্তানের ডিজিটাল পরিবর্তনের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এ উদ্যোগের মাধ্যমে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে প্রযুক্তি, বিনিয়োগ ও বৈদেশিক আয়ের নতুন সুযোগ তৈরি করছে দেশটি।
“ভৌগলিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষভাবে একটি বৈশ্বিক ডেটা সেন্টার কেন্দ্র হওয়ার জন্য উপযোগী পাকিস্তান। এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে ডিজিটাল হাব হিসাবে বিশ্বে ডেটা প্রবাহ ও ডিজিটাল অবকাঠামোর জন্য সবচেয়ে কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পিসিসি গঠনের পর থেকে অনেক আন্তর্জাতিক বিটকয়েন মাইনার ও ডেটা কোম্পানি আগ্রহ দেখিয়েছে। কিছু বিদেশি কোম্পানি দেশে এসে আলোচনাও করেছে। এ গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার পর আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও বেশি আন্তর্জাতিক কোম্পানি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
“পাকিস্তানের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ এখন ডিজিটাল কাজে ব্যবহার হবে। এআই ডেটা সেন্টার ও বিটকয়েন মাইনিংয়ের জন্য অনেক বিদ্যুতের প্রয়োজন। আর এসব খাতেই দেশটির এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আদর্শ।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরো সক্ষমতায় কাজ করে না, সেই বিদ্যুৎ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান অর্থ উপার্জনের একটা নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারবে।”
পিসিসি’র সিইও বিলাল বিন সাকিব বলেছেন, এ উদ্যোগ দেশকে বদলে দেবে। সঠিক নিয়মকানুন, স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বে একটি ক্রিপ্টো ও এআই শক্তিধর দেশ হয়ে উঠতে পারে পাকিস্তান।
সাকিব বলেছেন, বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল এ ডিজিটাল পরিবর্তন কেবল বড় বিনিয়োগই আনবে না, বরং বিটকয়েন মাইনিংয়ের মাধ্যমে সরকারকে মার্কিন ডলারে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনেরও সুযোগ দেবে।
আরও বলা হয়েছে, নিয়মকানুন ঠিক হলে পাকিস্তান সরাসরি দেশের একটি ওয়ালেটে বিটকয়েন রাখতে পারবে, যা পাকিস্তানি রুপিতে বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে ডিজিটাল সম্পদ ব্যবহার করে দেশের অর্থনৈতিক স্থিরতা অর্জনের দিকে বিরাট এক পরিবর্তন হবে।