Published : 28 Oct 2024, 04:54 PM
আটশ বছরেরও বেশি আগে দেখা এক সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ নিয়ে বর্তমানে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি এ সুপারনোভা বিস্ফোরণের কেন্দ্রে এক ‘জম্বি তারা’র অবশিষ্ট খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই সুপারনোভা থেকে ‘জম্বি তারা’র বিভিন্ন অংশ ড্যানডেলিয়ন ফুলের মতো ছিটকে বেরিয়ে আসছে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।
সুপারনোভাটি ১১৮১ সালের দিকে প্রথম চিহ্নিত করেন চীনা ও জাপানি জ্যোতির্বিজ্ঞানীর। সে সময় প্রায় ৬ মাস ধরে ক্যাসিওপিয়া নক্ষত্রমণ্ডলের কাছে জ্বলজ্বল করতে দেখা যায় এটিকে।
ওই সময় জ্যোতির্বিজ্ঞানীর এর নাম দেন ‘অতিথি তারা’। মানব ইতিহাসে দেখা ৫টি গ্যালাকটিক সুপারনোভার মধ্যে এটি অন্যতম বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস।
সুপারনোভাটির এ অবশিষ্ট অক্ষত অবস্থায় ছিল ২০১৩ সাল পর্যন্ত এবং ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে চিহ্নিত করা হয় ১১৮১ সালে দেখা সুপারনোভার উৎস হিসাবে।
সুপারনোভার ধূলিকণার মেঘকে আরও ভালভাবে খতিয়ে দেখতে ‘কেক কসমিক ওয়েব ইমেজার’ ব্যবহার করেছে গবেষণা দলটি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ‘মাউনা কিয়া’ আগ্নেয়গিরিতে থাকা স্পেকটোগ্রাফ যন্ত্র।
এই যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে প্রাচীন সুপারনোভার একটি থ্রি ডি মানচিত্র তৈরি করেছে গবেষণা দলটি। একইসঙ্গে তারা হিসাব করে দেখেছেন, এসব ধূলিকণা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় এক হাজার কিমি বেগে সুপরনোভাটি থেকে বেরিয়ে আসছে।
“এর মানে হচ্ছে, বিস্ফোরণের পর থেকে সুপারনোভাটি থেকে বের হয়ে যাওয়া ধূলিকণার গতি কমেনি, এমনকি বাড়েওনি,” বলেছেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও নাসা’র হাবল ফেলো টিম কানিংহাম।
“পরিমাপ করা এই গতিবেগ অনুসরণ করে পেছনে ফিরে তাকালে বিস্ফোরণটি প্রায় হুবহু ১১৮১ সালের দিকে দেখা সুপারনোভাকে চিহ্নিত করে।”
শ্বেত বামনের বেঁচে থাকা দেহাবশেষও পাওয়া গেছে এ গবেষণায়, যেটি সুত্রপাত ঘটিয়েছিল সুপারনোভা বিস্ফোরণের। সাধারণত ‘থার্মোনিউক্লিয়া’র বিস্ফোরণের ফলে এর কেন্দ্রে থাকা তারাটিকে ধ্বংস করে সুপারনোভা। তবে এই শ্বেত বামনের কিছু অংশ এ ধরনের ‘জম্বি তারা’ হিসাবেই রয়ে যেতে পারে।
“সুপারনোভার যে অবশিষ্টাংশ এখনও দেখা যাচ্ছে তার গতিবেগ ও কাঠামোর থ্রিডি চেহারা থেকে এই ঘটনার স্বতন্ত্র অনেক বৈশিষ্ট্যই আমরা দেখতে পাচ্ছি, যেগুলো শত শত বছর আগে অবলোকন করেছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা,” - বলেছেন অস্ট্রিয়ার ‘ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও সহকারী অধ্যাপক ইলারিয়া কাইয়াজো।
“তবে এটি নতুন কিছু প্রশ্নও সামনে এনেছে এবং পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে নতুন চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সামনে।”