Published : 15 Oct 2024, 05:16 PM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই খাতে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সাতটি ছোট আকারের পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে গুগল।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটি সোমবার বলেছে, পারমাণবিক শক্তি বিষয়ক স্টার্টআপ ‘কাইরোস পাওয়ার’ নতুন যে সাতটি ছোট আকারের চুল্লি বসাচ্ছে, সেখান থেকে তারা পাঁচশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে। এ নিয়ে চুক্তিও করে ফেলেছে গুগল। ২০৩০ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে অনলাইনে আসবে এসব চুল্লি।
এই ‘পাওয়ার পার্চেজ এগ্রিমেন্ট’ বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি পারমাণবিক প্রযুক্তির বিকাশে সহায়ক হিসাবে কাজ করবে। বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি ২০১০ এর দশকে যেভাবে বায়ু ও সৌর শক্তিকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করেছে বিষয়টি ঠিক তেমন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
এরইমধ্যে পারমাণবিক শক্তি কাজে লাগাচ্ছে দুই প্রযুক্তি কোম্পানি মাইক্রোসফট ও অ্যামাজন। কারণ, এআই দৌড়ে টিকে থাকতে বিদ্যুতের বিশাল চাহিদা মেটাতে উপযুক্ত উৎস খুঁজছে কোম্পানি দুটি। এআই সিস্টেমের জন্য বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগে আর এর চাপ গিয়ে পড়ছে বিদ্যুতের গ্রিড ও অবকাঠামোর উপর।
“এক দশকেরও বেশি আগে নবায়নযোগ্য বা পরিবেশবান্ধব বিদ্যুতের জন্য প্রথম কর্পোরেট বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির পথ দেখানোর পর থেকে ক্লিন এনার্জির ব্যবহার বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে গুগল, যার মধ্যে রয়েছে আগের প্রজন্মের উন্নত ক্লিন টেকনোলজিও,” বলেছে কোম্পানিটি।
“পারমাণবিক চুল্লি থেকে পাওয়া শক্তি পরিবেশবান্ধব ও ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যা আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা নির্ভরযোগ্যভাবে মেটাতে সহায়ক।”
গুগল আরও বলেছে, এরইমধ্যে ‘বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানভিত্তিক অগ্রগতিকে শক্তিশালী করেছে এআই। একইসঙ্গে ব্যবসা ও গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন পরিষেবাকে উন্নত করা, জাতীয় প্রতিযোগিতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এআই’।
গুগলের দাবি, “সবার জন্য পুরোপুরিভাবে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে তাদের এই উদ্যোগ।”
বর্তমানে বিভিন্ন এআই সিস্টেম তৈরিতে ও চালাতে প্রয়োজন অনেক বেশি শক্তির। অনুমান অনুসারে, গুগলে সার্চ করতে যতটা শক্তি লাগে, তার ১০গুণ শক্তি ব্যবহার করে চ্যাটজিপিটিতে করা প্রশ্ন।
এ বছরের জুলাইয়ে গুগল বলেছে, ২০১৯ সাল থেকে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বেড়েছে ৪৮ শতাংশ, যেটি ঘটেছে মূলত এআই চালিত ডেটা সেন্টার চালাতে গিয়ে।
‘কাইরোস’-এর পরিকল্পনা হচ্ছে, অসংখ্য ছোট আকারের পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ, যেগুলোর উৎপাদনক্ষমতা বড় আকারের চুল্লির দশ ভাগের এক ভাগেরও কম, তবে এগুলোর নির্মাণ কাজ হবে অনেক সহজ ও দ্রুত।
গুগল বলছে, ‘সহজাতভাবেই’ নিরাপদ হবে এসব নতুন নির্মিত পারমাণবিক চুল্লি, যেখানে পানির বদলে শীতলীকরণে ব্যবহার হবে গলিত ফ্লোরাইড লবণ।
তবে নতুন এসব পারমাণবিক চুল্লি কোথায় নির্মিত হবে এর সঠিক স্থান এখনও ঘোষণা করেনি গুগল। আর ‘কাইরোস’-এর সঙ্গে চুক্তির আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেনি টেক জায়ান্টটি।