Published : 10 May 2025, 12:24 PM
আগামী ২০ বছরের মধ্যে নিজের বিপুল পরিমাণ সম্পদের ৯৯ শতাংশই দান করে দেবেন বলে ইচ্ছা পোষণ করছেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।
তিনি বলেছেন, নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে দান কার্যক্রম আরও জোরদার করবেন এবং পরিকল্পনা অনুসারে ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে এই ফাউন্ডেশন।
বৃহস্পতিবার এক ব্লগ পোস্টে বিল গেটস লিখেছেন, “আমার মৃত্যুর পর মানুষেরা আমাকে অনেক কিছু বলবেন, তবে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে ‘তিনি ধনী থাকা অবস্থায় মারা গেছেন’ এই কথাটি তার মধ্যে থাকবে না।”
৬৯ বছর বয়সী গেটস বলেছেন, তার নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশন এরইমধ্যে স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ১০ হাজার কোটি ডলার দান করেছে এবং তিনি আশা করছেন, আগামী দুই দশক ধরে বাজার ও মুদ্রাস্ফীতির ওপর নির্ভর করে আরও ২০ হাজার কোটি ডলার খরচ হবে।
নিজের ব্লগ পোস্টে উদ্যোক্তা অ্যান্ড্রু কার্নেগির লেখা ‘দ্য গসপেল অফ ওয়েলথ’ প্রবন্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে বিল গেটস লিখেছেন, ধনী মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সম্পদ সমাজের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।
গেটস সেখান থেকে অ্যান্ড্রু কার্নেগির একটি উক্তি উদ্ধৃত করে লিখেছেন, “যে মানুষ এইভাবে ধনী হয়ে মারা যায়, তিনি কলঙ্কিত হয়ে মারা যান।
সর্বশেষ এই প্রতিশ্রুতি গেটসের দান কার্যক্রম বাড়ানোর বিষয়টিকেই তুলে ধরেছে। প্রথমে, তিনি ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা পরিকল্পনা করেছিলেন তাদের মৃত্যুর পরও কয়েক দশক ধরে কাজ চালিয়ে যাবে গেটস ফাউন্ডেশন।
এ পরিবর্তন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে গেটস বলেছেন, আগামী ২০ বছরে আরও ধনী ব্যক্তি আসবেন, যারা ভবিষ্যতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আরও ভালোভাবে ঠেকাতে পারবেন।
“এটা আসলে তাড়াহুড়োর ব্যাপার। আমরা যদি চিরকাল থাকার চেষ্টা না করি, তবে আমরা অনেক বেশি ব্যায় করতে পারব এবং আমি জানি যে, এ ব্যায় আমার মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে।”
তবে নিজের ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করে দিলেও গেটস একজন বিলিয়নেয়ার হিসেবেই থাকবেন। মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গ অনুসারে, মাইক্রোসফটের এ সহপ্রতিষ্ঠাতা বর্তমানে পৃথিবীর পঞ্চম ধনী।
ব্লগ পোস্টে নিজের সম্পদের একটি টাইমলাইন শেয়ার করেছেন গেটস, যেখানে দেখা যাচ্ছে, তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার আটশ কোটি ডলার এবং সেখানে একটি হাতে আঁকা তীর ২০৪৫ সালের দিকে নামতে নামতে প্রায় শূন্যে পৌঁছেছে।
বিল গেটস আরও বলেছেন, ফাউন্ডেশন তার সঞ্চিত তহবিল থেকে ২০ হাজার কোটি ডলার দান করবে।
পল অ্যালেনের সঙ্গে মিলে ১৯৭৫ সালে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন গেটস এবং এ কোম্পানি কম্পিউটার সফটওয়্যার ও অন্যান্য প্রযুক্তি খাতে এক প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হয়ে ওঠে।
এ শতাব্দীতে ধীরে ধীরে কোম্পানিটি থেকে সরে আসেন গেটস। ২০০০ সালে মাইক্রোসফটের সিইও পদ থেকে ও ২০১৪ সালে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
গেটস বলেন, বিনিয়োগকারী ও দানশীল ব্যক্তি ওয়ারেন বাফেট’সহ অন্যান্য দাতাদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থ দান করছেন তিনি। তবে গেটস ফাউন্ডেশনের সমালোচকরা বলেন, ফাউন্ডেশনের দানখয়রাতির মাধ্যমে কর ফাঁকি দেন তিনি এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও অতিরিক্ত প্রভাব বিস্তার করেন গেটস।