Published : 02 Jun 2024, 04:45 PM
কম সোডিয়ামওয়ালা খাবারে অতিরিক্ত লবণ ছাড়াই এর লবণাক্ত স্বাদ বাড়িয়ে দেয়, সম্প্রতি এমন এক ব্যাটারিচালিত চামচ উন্মোচিত হয়েছে জাপানে।
চামচটি তৈরি হয়েছে প্লাস্টিক ও ধাতু দিয়ে। নিজেদের লবণ খাওয়ার অভ্যাস কমাতে বেগ পাচ্ছেন, এমন লোকজনের কথা মাথায় রেখে তৈরি এটি। আর গবেষকদের দাবি, এট স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরির সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেবে।
অতিরিক্ত সোডিয়াম সেবনের সঙ্গে যোগসূত্র আছে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও অন্যান্য রোগের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার।
জাপানে, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক গড়ে প্রায় ১০ গ্রাম লবণ খেয়ে থাকেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া মানদণ্ডের দ্বিগুণ।
‘ইলেকট্রিক সল্ট স্পুন’ নামের এ চামচটি কাজ করে ডিভাইসের ডগায় দুর্বল বিদ্যুৎপ্রবাহ চালিয়ে, যার মাধ্যমে জিহ্বায় সোডিয়াম আয়নের ঘনত্ব কমে যায়।
চামচটির জাপানি নির্মাতা ‘কিরিন’-এর তথ্য অনুসারে, এটি খাবারের অনুভূত লবণাক্ততাকে দেড় গুণ বাড়িয়ে দেয়।
কোম্পানি বলেছে, এই চামচে চারটি ভিন্ন স্তরে লবণাক্ততার তীব্রতা বাছাইয়ের সুযোগ পাবেন ব্যবহারকারী, যার মাধ্যমে কোম্পানি নিজেদের প্রচলিত বিয়ারের ব্যবসা থেকে সরে এসে স্বাস্থ্যবিষয়ক পণ্যের দিকে পাড়ি জমাচ্ছে।
পণ্যটি বিকাশে সহায়তা করেছেন টোকিওভিত্তিক ‘মেইজি ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক হোমেই মিয়াশিতা, যিনি এর আগে বিদ্যুৎপ্রবাহের মাধ্যমে খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়, এমন এক বৈদ্যুতিক চপস্টিকের প্রোটোটাইপ দেখিয়েছেন। এ ছাড়া, পুষ্টিতে অবদান রাখায় গত বছর নোবেল পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।
২০২১ সালে কোম্পানির চালানো এক জরিপে উঠে এসেছে, যারা লবণ খাওয়াকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চান, তারা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন যে, এতে করে খাবার একেবারে স্বাদহীন হয়ে যায়।
চামচটির ওজন ৬০ গ্রাম। আর এটি চলে রিচার্জএবল লিথিয়াম ব্যাটারি দিয়ে।
প্রাথমিকভাবে দুইশটি পণ্য অনলাইনে বিক্রির জন্য ছাড়ছে কিরিন, যেগুলোর প্রতিটির দাম ১৯ হাজার আটশ ইয়েন (৯৯ ইউরো) করে।
এর পাশাপাশি, এ মাস থেকে জাপানী খুচরা বিক্রেতাদের কাছেও এটি সীমিত পরিসরে বিক্রি শুরু করতে পারে কোম্পানিটি।
তবে কোম্পানিটি আশা করছে, পাঁচ বছরের মধ্যে গোটা বিশ্বে এ চামচের ব্যবহারকারী সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়াবে।
“জাপানের যে খাবারের সংস্কৃতি, তাতে লবণাক্ত স্বাদ একটু বেশি প্রাধান্য পায়,” বলেন কিরিনের গবেষক এই সাতো।
“সামগ্রিকভাবে, গোটা জাপানবাসীরই লবন খাওয়ার প্রবণতা কমানো দরকার। তবে, এক্ষেত্রে আমাদের নিয়মিত খাদ্যাভাস থেকে সরে আসার বিষয়টি জটিল হতে পারে।”
“এজন্যই আমরা এ বিদ্যুচ্চালিত চামচটি বানিয়েছি।”