Published : 30 Sep 2024, 02:28 PM
ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তবে মানুষের মস্তিষ্ক কিভাবে ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে বা এর সঠিক উপায় কী তা বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও কিছুটা রহস্য।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে পরের বার বিশ্রামের সময় মানুষের দেহ নিজ থেকেই চেষ্টা করে ঘুমকে আরও দীর্ঘ ও গভীর করে পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। দেহের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের অংশ এটি, যাকে বলা হচ্ছে ‘হোমিওস্টেসিস’।
এটি মানবদেহে সঠিক পরিমাণে ঘুম বজায় রাখতে সহায়তা করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
কিন্তু মস্তিষ্ক ঠিক কীভাবে মানুষের ঘুমের প্রয়োজনীয়তার হিসাব রাখে?
এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে মানুষের মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষের মধ্যে থাকা সংযোগের উপর মনোযোগ দেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ সুকুবা’-এর গবেষকরা, যা ‘সিনাপস’ নামে পরিচিত। মানবদেহের মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষ কীভাবে যোগাযোগ করে ও কাজ করে তাতে মূল ভূমিকা রাখে এসব সংযোগ।
‘সিনকিট-কে’ নামের এক নতুন টুল তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা মস্তিষ্কের বিভিন্ন সংযোগের মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে। ‘ইআইএন (এক্সাইটরি-ইনহিবিটরি নিউরোনাল নেটওয়ার্ক)’ নামের এক গাণিতিক মডেলও তৈরি করেছেন তারা, যা সিনাপটিক শক্তির বিভিন্ন পরিবর্তন কীভাবে মস্তিষ্কের কাযকলাপ ও ঘুমকে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করেছে তাদের।
এ গবেষণটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ। গবেষণায় ইঁদুরের মস্তিষ্কের ‘ফ্রন্টাল কর্টেক্স’-এ ‘সিনকিট-কে’ টুলটি ব্যবহার করেন গবেষকরা। ‘ফ্রন্টাল কর্টেক্স’ মস্তিষ্কের সামনের অংশ, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের এই অঞ্চলে সিনাপটিক সংযোগগুলোকে শক্তিশালী করা, আসলে ইঁদুরের ঘুমকে প্রভাবিত করেছে। এর বদলে, মস্তিষ্কের এই সংযোগটি বন্ধ করা হলে ইঁদুররা সহজে ঘুমাতে পারেনি।
মজার বিষয় হচ্ছে, ঘুমানোর পরে ইঁদুরের শক্তিশালী এই সিনাপটিক সংযোগগুলো স্বাভাবিক স্তরে ফিরে আসে। যা থেকে ইঙ্গিত মেলে, মস্তিষ্কের বিভিন্ন সংযোগকে পুনরায় তৈরি করতে সহায়তা করে ঘুম।
গবেষণার ফলাফল থেকে ধারণা মেলে, মানুষ কীভাবে ঘুমায় এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত মস্তিষ্কের সিনাপটিক সংযোগের শক্তি। মস্তিষ্কের এই সম্পর্কটিকে আরও ভালভাবে বোঝার মাধ্যমে নতুন চিকিৎসা বিকাশের দ্বার খুলে যাবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের, এর ফলে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না এমন মানুষদের জন্য মিলবে সহায়তা।