Published : 09 Nov 2021, 08:29 PM
ফিলিস্তিনের চিহ্নিত করতে ইসরায়েলের ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার উঠে এসেছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যদের বরাত দিয়ে দৈনিকটি জানিয়েছে, ডেটাবেইজটি কার্যত “ফিলিস্তিনিদের ফেইসবুক”।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যরা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছে, ‘ব্লু উলফ’ নামের একটি স্মার্টফোন প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে দুই বছর ধরে। ‘ব্লু উলফ’ ফিলিস্তিনের নাগরিকদের ছবি তুলে জমা করে একটি ডেটাবেইজে। ফিলিস্তিনের কোনো নাগরিকের ছবি তোলার পর সেটি ডেটাবেইজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে ব্লু উলফ। এরপর সৈনিকদের স্মার্টফোনে বিশেষ রঙ দেখিয়ে বুঝিয়ে দেয় যে ওই ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করতে হবে কি না।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, দুই বছরে পশ্চিম তীরের কয়েক হাজার ফিলিস্তিনির ছবি জমা হয়েছে ওই ডেটাবেইজে। সৈনিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছবি তোলার একাধিক “প্রতিযোগিতা” আয়োজন করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, পুরো হেব্রন শহর জুড়ে ফিলিস্তিনিদের চিহ্নিত করতে বিশেষ ক্যামেরা বসিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। সামরিক চেক পয়েন্টের সৈনিকদের জন্য ফিলিস্তিনি নাগরিকদের চিহ্নিত করে পরিচয় বাতলে দেয় ওই ক্যামেরাগুলো। এ ছাড়াও, সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা নজর রাখা হচ্ছে অনেক ফিলিস্তিনি বাসস্থানের উপর।
সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যরা বলছেন, সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করতে ওই নজরদারি ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল তাদের।
পশ্চিম তীরের সবচেয়ে বড় শহর হেব্রন। ইসরায়েলিদের সঙ্গে ফিলিস্তিনের নাগরিকদের সংঘাতের লম্বা ইতিহাস রয়েছে শহরটির। শহরটির বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। দুই পক্ষের সংঘাতের অতীত ইতিহাস থাকলেও সাধারণ মানুষের উপর ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির প্রয়োগকে উদ্বেগজনক হিসেবে বিবেচনা করছেন খোদ ইসরায়েলি সাবেক সৈনিকরা।
“আমার নিজের শহরের মলে ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে আমি নিজেই তাতে নিশ্চিন্ত থাকতে পারতাম না। মানুষ আঙুলের ছাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়, কিন্তু এটি আরও কয়েক গুণ বেশি বাড়াবাড়ি।”-- ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন ইসরায়েল সামরিক বাহিনীর সাবেক এক সদস্য।
প্রায় একই ধরনের প্রযুক্তির প্রয়োগ চলছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। তবে সবখানেই বিতর্কিত হয়েছে এর ব্যবহার। উইঘুরদের উপর নজর রাখতে একই ধরনের ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে চীন। ট্রেইন স্টেশনের লেনদেন প্রক্রিয়ায় ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি যোগ করেছে রাশিয়া। অন্যদিকে, স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি নির্ভর লেনদেন ব্যবস্থা চালু করে সম্প্রতি বিতর্কিত হয়েছে যুক্তরাজ্য।