Published : 13 May 2024, 04:44 PM
অপরাধী হ্যাকার দল ‘স্ক্যাটার্ড স্পাইডার’-এর সদস্যদের ধরতে কাজ করছে এফবিআই— সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
হ্যাকার দলটি মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোতে সক্রিয় ও এখন পর্যন্ত তারা ডজনখানেক মার্কিন সংস্থার ওপর সাইবার আক্রমণ করেছে।
দলটির বেশিরভাগ সদস্যই ১৯ থেকে ২২ বছর বয়সী। গত বছর ক্যাসিনো কোম্পানি ‘এমজিএম রিসোর্টস ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘সিজার্স এন্টারটেইনমেন্ট’-এর সিস্টেমে প্রবেশ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে শিরোনামে উঠে আসে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
স্বাস্থ্য ও টেলিকম থেকে শুরু করে আর্থিক পরিষেবা খাতের বেশ কিছু কোম্পানিতে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সাইবার আক্রমণ করার অভিযোগ রয়েছে দলটির বিরুদ্ধে। এর ফলে দলটিকে আইনের আওতায় আনতে চাপ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর।
“এমন অপরাধী কার্যক্রম চালানো লোকদের মামলার আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি, যার বেশিরভাগই মূলত ‘কম্পিউটার জালিয়াতি’ ও ‘অপব্যবহার আইনের’ আওতায় পড়ে,” রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন এফবিআইয়ের সাইবার ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ব্রেট লেদারম্যান।
তিনি আরও যোগ করেন, দলটি প্রাথমিকভাবে তৈরি হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলোর হ্যাকারদের বিরল এক জোট থেকে, যারা কাজ করেছে পূর্ব ইউরোপের অভিজ্ঞ সাইবার অপরাধীদের সঙ্গে।
“হ্যাকটিভিজম’-এর বাইরে এমন ভৌগলিকভাবে ছড়িয়ে থাকা হ্যাকারদের জোট সচরাচর দেখা যায় না।”
২০২২ সাল থেকেই ‘স্ক্যাটার্ড স্পাইডারে’র ওপর নজরদারী চালিয়ে আসছেন নিরাপত্তা গবেষকরা। তাদের দাবি, দলটি অন্যান্য সাইবার অপরাধী দলের তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক, বিশেষ করে বিভিন্ন কোম্পানির নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করে সেখানকার আইটি কর্মীদের পরিচয় চুরির বেলায়।
নিজেদের সিস্টেম বাঁচাতে হ্যাকার দলটিকে প্রায় দেড় কোটি ডলারের মুক্তিপণ দিয়েছে ‘সিজার্স এন্টারটেইনমেন্ট’।
কেবল সাইবার আক্রমণ নয়, দলটিকে কখনও কখনও ভুক্তভোগীর ওপর শারীরিক আক্রমণের হুমকিও দিতে দেখা গেছে।
জানুয়ারিতে দলটির গতিবিধি কিছুটা কমতে দেখা গেছে। তবে, তারা এখনও ‘বেশ সক্রিয়’ বলে দাবি গুগলের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ‘ম্যান্ডিয়েন্ট’-এর প্রযুক্তি প্রধান চার্লস কারমাকালের। আর এর আগে বেশ কিছু ভুক্তভোগীর সঙ্গেও কাজ করেছে কোম্পানিটি।
তিনি বলেন, গত দুই বছরে একশটির বেশি সংস্থাকে শিকার বানিয়েছে হ্যাকার দলটি, যেখানে তারা প্রায় সবগুলো সংস্থারই কোনও না কোনও স্তরে প্রবেশ করতে পেরেছে। এমনকি লোকজনের ওপর নিয়মিতই সফল ফিশিং আক্রমণ চালাতে দেখা গেছে তাদের।
দলটির আক্রমণের তীব্রতার তুলনায় গ্রেপ্তারের হার কম হওয়ার বিষয়টিকে সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ। বিশেষ করে যেহেতু তাদের অবস্থান পশ্চিমা দেশগুলোয়।
এদিকে, বিভিন্ন প্রাইভেট সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি এফবিআইকে প্রমাণ সংগ্রহে সহায়তা দিয়েছে বলে দাবি লেদারম্যানের।
“এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দল। আমরা তাদের সন্ধান চালিয়ে যাব।”
এখন পর্যন্ত এ হ্যাকার দল সংশ্লিষ্ট একটি গ্রেপ্তারের খবর মিলেছে। জানুয়ারিতে ফ্লোরিডা থেকে নোয়া আরবান নামের ১৯ বছর বয়সী একজনকে গ্রেপ্তার করেছে এফবিআই, যার হ্যাকার দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন লেদারম্যান নিজেই।