Published : 30 Aug 2024, 03:19 PM
এআই প্রযুক্তির সহায়তায় রেস্তোরাঁ মালিকরা কি বিভিন্ন নতুন মেনু বানিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পারবেন? না কি এটা স্রেফ বাজে একটি রেসিপি হবে?
প্রশ্নগুলোর জবাব পেতে চাইছে বহুজাতিক পিৎজা চেইন ‘ডোডো পিৎজা’। তারা দুবাই শাখায় মোবাইল অ্যাপে চ্যাটজিপিটিভিত্তিক ‘ফ্লেভার জেনারেটর’ চালু করেছে। এই অ্যাপটি জেনারেটিভ এআইকে ৩৫টি উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ দেয়। হিসাব বলছে, এই ৩৫টি উপকরণ মিলিয়ে তিন কোটি ধরনের পিৎজার রেসিপি পাওয়া সম্ভব।
পরীক্ষার অংশ হিসাবে ডোডো পিৎজার দুবাই শাখার প্রধান স্পার্টাক আরতুনিয়ান চ্যাটবটকে এমন এক পিৎজা রেসিপি তৈরির নির্দেশ দেন, যা ‘দুবাইয়ের জন্য সেরা হবে’।
“এটা সত্যিই একটি রেসিপি বানিয়েছে। আমরা সেটা চালুও করেছি। এটা আসলেই বড় এক সাফল্য, এখনও আমাদের মেনুতে আছে এটি,” বলেন তিনি।
দুবাইয়ে থাকা ৩০ লাখ মানুষের ৯০ শতাংশই অভিবাসী। “তাই এখানে অনেক ধরনের সংস্কৃতি দেখা যায়, ভারতীয়, পাকিস্তানি, ফিলিপিনো, আরব এমনকি ইউরোপীয় লোকজনও।”
আরতুনিয়ান চ্যাটজিপিটিকে এমন একটি পিৎজা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেখানে এই সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির বিষয়টি ফুটে ওঠে। এর জবাবে চ্যাটবটটি যে পিৎজার রেসিপি দেয়, তার টপিং হিসেবে ছিল আরবের শর্মা চিকেন, ভারতীয় গ্রিলড পনির চিজ, মধ্যপ্রাচ্যের ‘জাতার’ হার্ব ও তাহিনি সস। আর এতেই মজে গেছেন ডোডো পিৎজার গ্রাহকরা।
“শেফ হিসেবে, আমি কখনই এইসব উপকরণ পিৎজার ওপর দেব না। কিন্তু, বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এগুলো মিলিয়ে যে স্বাদ তৈরি হয়েছে সেটি কিন্তু ভালো ছিল,” বলেন আরতুনিয়ান।
তবে, এআইয়ের তৈরি করা বেশ কয়েকটি রেসিপিই তাদের মেনুতে জায়গা পায়নি। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, স্ট্রবেরি ও পাস্তা এবং ব্লুবেরি ও ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালের মিশ্রণে তৈরি পিৎজা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে অবস্থিত রেস্তোরা চেইন ‘ভেলভেট তাকো’তে এআই নিয়ে একই ধরনের নিরীক্ষা চালিয়েছেন এর কালিনারি ডাইরেক্টর ভেনেসিয়া উইলিস।
এআই নিয়ে তার ‘এতটাই আগ্রহ’ ছিল যে তিনি চ্যাটজিপিটিকে রেস্তোরার ‘তাকো অফ দ্য উইক’-এর একটি রেসিপি তৈরি করার সুযোগ দিয়েছিলেন।
আর এতে প্রম্পট হিসেবে উইলিস চ্যাটবটকে আটটি উপকরণ ব্যবহার করতে বলেন, যেখানে শুধু একটি তর্তিয়্যা ও একটি প্রোটিন বাছাই করার সুযোগ ছিল।
“এর মধ্যে বেশ কিছু অদ্ভুত মিশ্রণ ছিল, যেখানে লাল কারি, নারকেলের টোফু ও আনারসের সংমিশ্রণ একসঙ্গে যায় কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান ছিলাম,” বলেন উইলিস।
কিন্তু চ্যাটবটটি থেকে তিনটি সম্ভাবনাময় রেসিপি থেকে অবশেষে চিংড়ি এবং স্টেকের একটি তাকো বাছাই করে তা বিক্রি শুরু করেন তিনি, যা মাত্র এক সপ্তাহেই বিক্রি হয়েছে ২২ হাজারটি।
“আমার ধারণা, সৃজনশীলতায় কিছুটা ঘাটতি থাকলে এআইকে উপকারী একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আর এর বিভিন্ন সংমিশ্রণ আসলে কাজে লেগেও যেতে পারে, চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কি? এমনকি এআই মাঝেমধ্যে এমন কিছু পরামর্শ দিতে পারে, যা কখনও আমার কল্পনাতেও আসত না।”
তবে, উইলিস আরও যোগ করেন, খাবার রেসিপি তৈরির ক্ষেত্রে তিনি পুরোপুরি এআইয়ের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার পক্ষে নন। কারণ সেইসব রেসিপি মূল্যায়নে মানুষের ছোঁয়া থাকা জরুরী।