Published : 10 Oct 2022, 07:15 PM
হোয়াটসঅ্যাপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ভুয়া অ্যাপের মাধ্যমে ডেটা চুরির অভিযোগে কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মেটা।
‘ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট অফ ক্যালিফোর্নিয়ায়’ দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তালিকায় নাম থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে হংকং-ভিত্তিক ‘রকি টেক এইচকে লিমিটেড’, চীনের ‘বেইজিং লুওকাই টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড’ ও ‘চিটচ্যাট টেকনোলজি লিমিটেড’, যেটির সদর দপ্তর তাইওয়ানে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ‘ব্লিপিংকম্পিউটারের’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল মে মাস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হারিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী। আর এ কারণেই অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম থেকে স্পর্শকাতর ডেটা চুরি করা বেশ কিছু ‘আনঅফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ ক্লায়েন্ট’ বানানো কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে মেটা।
মেটার অভিযোগ, ‘হেমডস’, ‘হাইলাইট মোবি’ ও ‘হেহোয়াসঅ্যাপ’-এর মতো বিভিন্ন নামে সম্মিলিতভাবে অ্যাপ বাজারজাত করে এই সব কোম্পানি, প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উন্নত ফিচার আনার দাবি করে ব্যবহারকারীকে প্রলুব্ধ করে। এর পর ওই অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নিয়ে ডেটা চুরির পাশাপাশি বিভিন্ন কন্টাক্টে স্প্যাম বার্তা পাঠায় হ্যাকাররা।
মেটার চিহ্নিত অন্যান্য কিছু ক্ষতিকারক অ্যাপ হলো ‘অ্যাপআপডেটার ফর হোয়াটসঅ্যাপপ্লাস ২০২১ জিবি ইয়ো এফএম হেমডস’ ও ‘থিম স্টোর ফর জ্যাপ’।
অভিযোগ অনুযায়ী, এই সব অ্যাপের কয়েকটি মিলেছে গুগল স্টোরে। আর বাকিগুলো পাওয়া গেছে ‘এপিকেএসফ্রি’, ‘মালাভিদা’, ‘আইডেসকারগার’ ও ‘এপিকে পিওর’-এর মতো বিভিন্ন থার্ড পার্টি এপিকে সাইটে।
ইনস্টলের পর ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নিতে ‘বান্ডল করা’ ম্যালওয়্যারও সরবরাহ করে এই সব অ্যাপ।
প্লে স্টোর থেকে ‘অ্যাপআপডেটার ফর হোয়াটসঅ্যাপপ্লাস ২০২১ জিবি ইয়ো এফএম হেমডস’ অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ১০ লাখেরও বেশিবার। যদিও একে তালিকা থেকে নামিয়ে ফেলার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট অ্যান্ড্রয়েড পুলিস।
“কম্পিউটারে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর পরিচয় চুরি এবং ‘অ্যাকাউন্ট কি’ পেতে এই সব ক্ষতিকারক অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম করেছে আসামীরা।” – অভিযোগে লিখেছে মেটা।
অভিযোগে আরও উল্লেখ রয়েছে এই সব অ্যাপ নির্মাতার কার্যক্রম মেটার নির্মাতা চুক্তি ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের শর্তাবলীর সরাসরি লঙ্ঘন।
ব্লিপিংকম্পিউটারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই মাসে এমন কয়েকটি অ্যাপ সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছিল মেটা।
ভুয়া হোয়াসঅ্যাপ বিষয়ক অ্যাপের সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত সতর্কবার্তা পোস্ট করেছেন হোয়াটসঅ্যাপ প্রধান উইল ক্যাথকার্ট। পাশাপাশি, ‘হে হোয়াটসঅ্যাপ’ ও অন্যান্য ক্ষতিকারক অ্যাপের নির্মাতা ‘হেমডস’কে এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
ক্যাথকার্ট আরও বলেন, কোম্পানিটি তাদের পাওয়া বিভিন্ন তথ্য গুগলের কাছে পাঠানোর কারণেই অ্যাপগুলো তালিকা থেকে সরানো সম্ভব হয়েছে।
জুলাই মাসের এই উদ্ঘাটনের কারণে ‘প্লে প্রোটেক্ট’ সেবায় একটি আপডেট এনেছিল গুগল, যা অপারেটিং সিস্টেমকে এরইমধ্যে ডিভাইসে ইনস্টল করা বিভিন্ন ম্যালওয়্যারযুক্ত অ্যাপ শনাক্ত করার সুযোগ দেয়।
অ্যান্ড্রয়েড পুলিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে’ প্লে স্টোরে জায়গা করে নেওয়া এই সব ক্ষতিকারক অ্যাপের কাছে নতুন কিছু নয়। তবে, বেশিরভাগ অ্যাপই এরপর নিজে থেকে শনাক্ত করে সরিয়ে ফেলছে গুগল।