Published : 13 May 2025, 10:49 AM
সশস্ত্র এক দলের নেতা নিহত হয়েছেন, এমন খবর প্রকাশের পর লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নগরীর কেন্দ্রস্থল ও অন্যান্য এলাকা গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয় বলে ফোনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন ত্রিপোলির তিন বাসিন্দা।
ত্রিপোলির ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা আবু সালিম ভিত্তিক অন্যতম প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী সাপোর্ট ফোর্স অ্যাপারেটাস এসএসএ- এর নিহত এই নেতার নাম আব্দুলঘানি কিকলি।
এসএসএ, জাতিসংঘ সমর্থিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০২১ সালে জাতীয় ঐক্য সরকারের (জিএনইউ) সঙ্গে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের অধীনস্থ একটি বাহিনী।
জিএনইউয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় নাগরিকদের ‘তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য’ বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়টির এ আহ্বানের পর ত্রিপোলির বিভিন্ন রাস্তায় থাকা গাড়িগুলোর চালকরা দ্রুত বাড়িতে ফেরার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করেন।
মঙ্গলবার ভোররাতে জিএনইউয়ের গণমাধ্যম জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আবু সালিম এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ত্রিপোলির এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, “আমি ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শুনেছি, আকাশে লাল আলো দেখেছি।”
অন্য দুই বাসিন্দা জানিয়েছেন, পুরো আবু সালিম ও সালাহ ইদ্দিন এলাকাজুড়ে গুলির শব্দের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে।
ত্রিপোলি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্রশাসন পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব ফ্যাকাল্টি ও বিভাগের ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রসাশনিক কার্যক্রম এবং দপ্তরগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
লিবিয়ায় থাকা জাতিসংঘ মিশন সব দলকে ‘অবিলম্বে লড়াই বন্ধ করে শান্ত অবস্থা ফিরিয়ে আনার’ আহ্বান জানিয়েছে। দলগুলোকে বেসামরিকদের রক্ষায় তাদের বাধ্যবাধকতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে মিশন।
এক বিবৃতিতে মিশন বলেছে, “বেসামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী তেল সমৃদ্ধ দেশ লিবিয়ায় সাবেক নেতা মুয়াম্মাম গাদ্দাফির পতনের পর থেকে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ২০১১ সালে নেটো সমর্থিত সশস্ত্র গণঅভ্যুত্থানে গাদ্দাফির পতন হয় ও তিনি নিহত হন। এরপর ২০১৪ সালে দেশটি লড়াইরত পূর্বাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় উপদলগুলোর মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
২০২০ সালে এক অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে বড় ধরনের লড়াইগুলো বন্ধ হয়। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক সংকট দূর করার প্রচেষ্টাগুলো সফল হয়নি। বড় বড় উপদলগুলো প্রায়ই প্রাণঘাতী সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আর তারা লিবিয়ার পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়।
ত্রিপোলি ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জিএনইউ এবং দেশটির অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। এখানে বেশ কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র উপদল আছে যারা প্রায়ই তীব্র লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে।