Published : 14 Mar 2025, 06:30 PM
চীনের সঙ্গে অবনতিশীল সম্পর্কের মধ্যেই এবার দেশটিকে নিয়ে এ যাবৎকালের কঠোর মন্তব্য করেছেন তাইওয়ানের নেতা লাই ছিং-তে। চীনকে ‘বিদেশি বৈরী শক্তি' তকমা দিয়ে তিনি বলেছেন, দেশটির বিরুদ্ধে তাইওয়ানের "আরও বেশি সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।"
বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় নিরাপত্তা বৈঠকের পর লাই এক ভাষণে তাইওয়ানের নিরাপত্তা জোরদারে সামরিক আদালত ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা এবং চীন, হংকং ও ম্যাকাওয়ের নাগরিকদের জন্য বসবাসের নিয়ম আরও কঠোর করার নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। আর তখনই তিনি চীনকে নিয়ে ওই মন্তব্য করেন।
লাইয়ের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীন কর্তৃপক্ষ তাকে "দুই পারের শান্তি বিনষ্টকারী" এবং "সংকট সৃষ্টিকারী" আখ্যা দিয়েছে।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে চীন, তবে তাইওয়ান নিজেদের আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে দেখে।
লাইয়ের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় চীনের তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র চেন বিনহুয়া বলেছেন, “তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি যদি সীমা (রেড লাইন) অতিক্রম করে, তাহলে চীনের চূড়ান্ত ব্যবস্থা না নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না”
তিনি আরও বলেন, “যারা আগুন নিয়ে খেলে, তারা জ্বলবেই।” চীন এর আগেও তাইওয়ানে নির্বাচনের আগে দিয়ে স্বাধীনতাপন্থি নেতা লাই কে সমস্যাসৃষ্টিকারী আখ্যা দিয়েছিল।
লাই বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চীনের ক্রমবর্ধমান গুপ্তচর কার্যকলাপের বিষয়ে সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, চীন "তাইওয়ানের স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে" সামরিক বাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্য, সংঘবদ্ধ অপরাধী গোষ্ঠী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে লাগিয়ে দেশকে ভেতর থেকে বিভক্ত ও দুর্বল করার চেষ্টা করছে।”
তিনি জানান, গত বছর তাইওয়ানে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় তিনগুণ বেশি। এদের অধিকাংশই সামরিক বাহিনীর বর্তমান বা সাবেক সদস্য।
চীনা অনুপ্রবেশ ও সামরিক বাহিনীর ওপর গুপ্তচরবৃত্তির চেষ্টা ঠেকাতে তাইওয়ানে সামরিক আদালত ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হবে বলে ঘোষণা দেন লাই।
তিনি বলেন, “সামরিক বিচারকদের আবারও ফ্রন্টলাইনে ফেরত পাঠানো হবে, যাতে তারা সক্রিয় সেনা সদস্যদের অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলো পরিচালনা করতে পারেন।”
এর আগে, তাইওয়ান ২০১৩ সালে এক সেনা রিক্রুটের মৃত্যুর ঘটনায় অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার অভিযোগের মুখে সামরিক আদালত ব্যবস্থা বাতিল করেছিল।
বিনোদন জগতেও চীনের প্রভাব মোকাবেলার পরিকল্পনা:
লাই আরও জানান, তাইওয়ানের বিনোদন তারকাদের জন্য চীনে কাজ করার সময় আচরণবিধির দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে, যাতে চীন তাদের জাতীয় মর্যাদার পরিপন্থি কাজ করতে বাধ্য না করতে পারে।
সম্প্রতি তাইওয়ানের কিছু অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসেবে দাবি করা পোস্ট শেয়ার করলে তাদের সমালোচনা করে তাইওয়ানের কর্তৃপক্ষ।
চীনের বিশাল বিনোদন শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী তাইওয়ানি তারকাদের ওপর বেইজিংপন্থি অবস্থান নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে।