Published : 04 Jun 2025, 05:17 PM
২০০২ সালে প্রাণঘাতী বালি নাইটক্লাব বোমা হামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ইন্দোনেশীয় এক নাগরিক প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর নিজের কফির ব্যবসা শুরু করেছেন। এ ব্যবসা থেকে আয়ের কিছু অংশ হামলায় আহতদের সহায়তায় ব্যয় করারও ইচ্ছা আছে তার।
ইন্দোনেশীয় এ নাগরিকের নাম উমর পাতেক। বালির দুটি নাইটক্লাবকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া বোমা বানানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া পাতেক ২০১২ সালে ২০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
তেইশ বছর আগের ওই প্রাণঘাতী বোমা হামলা ২০২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। এর মধ্যে ৮৮ জন ছিল অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক, ৩৮ জন ইন্দোনেশিয়ার।
২০২২ সালে পাতেক প্যারোলে মুক্তি পান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তার মুক্তি ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল।
মঙ্গলবার পূর্ব জাভার সুরাবায়ায় একটি ক্যাফেতে নিজের ব্যবসার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাতেক বলেন, “আমি এখনো বাইরের জগৎ নিয়ে আতঙ্কিত। মুক্তির পর কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল।”
ব্যবসার জন্য তার অতীত সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে এখনও শঙ্কিত তিনি।
“আমি জানি এখনো অনেকে আমার ওপর ক্ষুব্ধ। কিন্তু আমি চাই না সেই সংশয় তাদের মনে গেঁথে থাকুক,” বলেছেন তিনি।
ক্যাফেটির মালিক দন্ত চিকিৎসক ডেভিড আন্দ্রেয়াসমিতো। তিনি পাতেকের কাছ থেকে কফি বিন নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে তার দোকানে ব্যবহার করে।
ডেভিড বলেছেন, পাতেক তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং মানুষ যেন তাকে দ্বিতীয় একটা সুযোগ দেয় তা চাইছেন। এ কারণেই ডেভিড তার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে গিয়েছেন।
রয়টার্স লিখেছে, কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ পাতেককে তাদের ‘উগ্রবাদমুক্তকরণ’ কার্যক্রমের একটি সফল উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চাইছে।
পাতেকের ব্যবসার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন বালি হামলায় আহত চুসনুল চোতিমাহ।
দগদগে পোড়া ক্ষত নিয়ে লড়ে যাওয়া এ নারী অনুষ্ঠানে পাতেকের সামনে গিয়ে বলেন, “আমি একসময় তোমার ওপর রাগ পুষে রেখেছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে ক্ষমা করেছি। আমি জানি তুমি বদলে গেছো।”
“তবে শুধু ক্ষমা চাইলেই হবে না, আহতদের পাশে দাঁড়াতে হবে,” বলেছেন তিনি।