Published : 17 May 2025, 01:23 PM
সন্দেহভাজন ভেনেজুয়েলীয় গ্যাং সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারে স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট।
পর্যাপ্ত আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া ওই অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিতাড়নে প্রশাসনের চেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত দোষারোপও করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ট্রাম্প যে আইনের অধীনে এ অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিতাড়ন করতে চাইছেন, সেই ১৭৯৮ সালের আইনটি মূলত যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহার করা হতো।
যুক্তরাষ্ট্র কোনও দেশের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থায় থাকলে বা কোনও দেশ যুক্তরাষ্ট্রে আগ্রাসন চালালে কিংবা আগ্রাসনের হুমকি দিলে তখন ব্যবহারের জন্য এই আইনটি করা হয়েছিল।
যুদ্ধকালীন এ আইনের আওতায় একজন প্রেসিডেন্ট কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের টার্গেট করা এবং তাদেরকে দ্রুত ফেরত পাঠানোর বিপুল ক্ষমতা পেয়ে যান।
কিন্তু বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কোনও যুদ্ধের মধ্যে বা হুমকির মুখে নেই। এমন একটি শান্তিপূর্ণ সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহার করতে চাওয়ার সমালোচনা করেছে নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন।
আইনটির মাধ্যমে বিতাড়নে স্থগিতাদেশ বহাল রাখতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের পক্ষে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের অ্যাটর্নির আবেদন শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা মঞ্জুর করেন।
এর আগে সর্বোচ্চ এ আদালত গত ১৯ এপ্রিল এক আদেশে টেক্সাসের একটি আটক কেন্দ্রে থাকা কয়েক ডজন অভিবাসন প্রত্যাশীকে বিতাড়নের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।
জানুয়ারিতে ফের প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট অভিবাসনে কঠোর নীতি আরোপের যে অঙ্গীকার করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় ভেনেজুয়েলার গ্যাং ত্রেন দে আরাগুয়া-র সন্দেহভাজন সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার পদক্ষেপ নেয় তার প্রশাসন।
প্রয়োজনীয় নোটিস ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ছাড়াই ট্রাম্প প্রশাসন ওই অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে তাতে হস্তক্ষেপ করতে ১৮ এপ্রিল আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আবেদন জানায়।
“এই প্রেক্ষাপটে, বিতাড়নের মোটামুটি ২৪ ঘণ্টা আগে এক নোটিস, যেখানে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অধিকার প্রয়োগ করে কীভাবে সেই বিতাড়নের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা যায়, তার উল্লেখও নেই—তা নিশ্চিতভাবেই সাংবিধানিক মানদণ্ড পূরণ করে না,” শুক্রবার সংক্ষিপ্ত এক রায়ে এমনটাই বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
নিয়ম অনুযায়ী, কারও বিরুদ্ধে এই ধরনের বৈরি পদক্ষেপের আগে তাকে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে নোটিস এবং এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ও শুনানির সুযোগ দিতে হবে।
ট্রাম্প শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আদেশের কড়া সমালোচনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, “এটি আমেরিকার জন্য একটি বাজে ও বিপজ্জনক দিন।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলছেন, এ আইনের ফলে অবৈধ অভিবাসী যারা তার ভাষায় অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের ‘আর দীর্ঘ, জটিল ও ব্যয়বহুল আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করার সুযোগ থাকল না’; এই আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের এ রায় অন্য অপরাধীদেরও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশে উৎসাহ যোগাবে, বলেছেন তিনি।
আটক 'ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের' বিতাড়ন আটকাল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট
বিতাড়িত ‘গ্যাং সদস্যদের’ চেয়ে নাৎসিদের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের ‘আচরণ ভালো ছিল’