Published : 13 May 2025, 11:34 PM
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব ১৪,২০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি সই করেছে। চুক্তিটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি’ বলে ঘোষণা করেছে হোয়াইট হাউজ।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সফরকালে মঙ্গলবার এই চুক্তি হয়। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলো সৌদি আরবকে ১৪,২০০ কোটি ডলার মূল্যের আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও অন্যান্য সামরিক সেবা সরবরাহ করবে।
চুক্তি সইয়ের পর মঞ্চে এক বক্তব্যে ট্রাম্প সৌদি যুবরাজকে ‘বিস্ময়কর’ একজন মানুষ বলে প্রশংসা করেন। ‘সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধন এখন আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে শক্তিশালী’ বলেন তিনি।
উপসাগরীয় অঞ্চলের ধনী আরব দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগের আশা নিয়ে মঙ্গলবার ট্রাম্প সৌদি আরব সফরে যান।
এই সফরে ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য অর্থনৈতিক চুক্তি, গাজা যুদ্ধ বা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা নয়।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। অস্ত্রচুক্তি দীর্ঘদিন ধরেই দেশ দুটির এই কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ হয়ে আছে।
কিন্তু ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন ইয়েমেনে ছড়িয়ে পড়া ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে সৌদি আরবের ভূমিকার কারণে দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করেছিল।
২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশুগজি হত্যাকাণ্ড ঘিরে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যে ওই হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ বিন সালমানের হাত থাকার খবর বেরিয়ে এসেছিল। তবে বিন সালমান এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
২০১৯ সালে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থাকার সময় সৌদি আরবকে একঘরে করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তারপরও বাইডেনের আমলে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ধীরে ধীরে উন্নত হয়েছিল।
গতবছর থেকে আবার সৌদি আরবে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বিক্রি শুরু হয়। আর এবার ট্রাম্পের আমলে সৌদি আরবের সঙ্গে ওই ঐতিহাসিক চুক্তি হল। ট্রাম্প এ চুক্তির পর এক ভাষণে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরব আজ তাদের সম্পর্ক আগের যে কোনও সময়ের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছে।”
বক্তব্যে ট্রাম্প আরও কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে সিরিয়া, ইরান এবং গাজা-ইসরায়েল প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেন। সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ইরানের সঙ্গে চুক্তি করতে চান বলে জানান তিনি।
ওদিকে, গাজাবাসীদের আরও ভাল একটি ভবিষ্যৎ দরকার উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, কিন্তু গাজার নেতারা সাধারণ মানুষকে অপহরণ, নির্যাতন ও হামলার নিশানা করা বন্ধ না করা পর্যন্ত সেটি ঘটবে না।