Published : 02 Jun 2025, 06:59 PM
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৯ সন্তান হারানো ফিলিস্তিনি নারী চিকিৎসক এবার তার স্বামীকেও হারিয়েছেন।
গত ২৩ মে গাজার খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালে কাজ করা চিকিৎসক আলা-আল-নাজ্জারের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। সে সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কাজে ছিলেন তিনি।
তার স্বামী হামদি আল-নাজ্জারও একই হাসপাতালে কাজ করতেন। হামলার দিন তিনি তার স্ত্রীকে কাজে দিয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার পর ইসরায়েলের হামলার শিকার হন।
১০ সন্তান নিয়ে বাড়িতে থাকার সময়ই হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় বাড়ি। ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই মারা যায়। মৃত সন্তানদের সবারই বয়স ছিল ৬-১২ বছরের মধ্যে।
হামদি আল-নাজ্জার গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তাকে এবং তার ১১ বছর বয়সী এক সন্তানকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হামদির মস্তিষ্ক এবং অভ্যন্তরীন ক্ষতের চিকিৎসা চলছিল।
নাসের হাসপাতালে কাজ করা বুলগেরীয় এক চিকিৎসক গত সপ্তাহে বিবিসি-কে বলেন, আদমের বাবা হামদির ব্রেইন, ফুসফুস, ডান হাত এবং কিডনি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার চিকিৎসা চলার মাঝেই গত শনিবার তিনি মারা যান।
এখন কেবল আলা আল-নাজ্জার আর তার ১১ বছর বয়সী ছেলে আদম- এই দুইজনই বেঁচে। হাসপাতালে আদমের চিকিৎসা চলছে। আদমের চাচার অনুরোধে ইতালি সরকার তার চিকিৎসা করতে রাজি হয়েছে।
নাসের হাসপাতালে আদমের চিকিৎসা করা এক ব্রিটিশ সার্জন ইসরায়েলের হামলায় নাজ্জারের প্রায় পুরো পরিবার হারানোর এই ঘটনাকে অত্যন্ত নির্মম বলে বর্ণনা করেছেন।
তবে এ ঘটনার পরও আলা আল নাজ্জার হাসপাতালে তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউসুফ আবু আল-রিশ বলেন, নাজ্জার তার সন্তানদের বাড়িতে রেখে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন। তিনি সেই সব অসুস্থ শিশুদের দেখভাল করেন, যাদের নাসের হাসপাতাল ছাড়া আর কোনো আশ্রয় নেই।
রিশ বলেন, তিনি হাসপাতালে পৌঁছানোর পর নাজ্জারকে ‘দৃঢ়, শান্ত, ধৈর্যশীল ও স্থির’ দেখেছেন, যার চোখে ছিল বাস্তবতা মেনে নেওয়ার দৃষ্টি। তার কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল কেবল আল্লাহর জিকির ও ক্ষমা প্রার্থনার ধ্বনি।
৩৮ বছর বয়সী চিকিৎসক নাজ্জার একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, কিন্তু গাজার বেশিরভাগ চিকিৎসকের মতই ইসরায়েলের প্রচণ্ড আক্রমণের সময় তিনি জরুরি বিভাগে কাজ করছেন।