Published : 30 Apr 2025, 11:55 AM
সুইডেনের উপসালা শহরের কেন্দ্রস্থলে মঙ্গলবার গুলিবর্ষণের এক ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন আর এ নিয়ে একটি হত্যা তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, তারা গুলিবর্ষণের ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে আর এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা না ঘৃণাজনিত অপরাধ, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছে না।
সুইডেন পুলিশের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে যে বৈদ্যুতিক স্কুটারে করে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে চলে গেছেন। এই ব্যক্তি অপরাধী না প্রত্যক্ষদর্শী অথবা এমন কেউ যার সঙ্গে ঘটনার সম্পর্ক আছে, এই মুহূর্তে তা পরিষ্কার হয়নি।”
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের শনাক্ত করা এখনও বাকি। তবে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যের বিষয়ে কোনো অনুমান প্রকাশ করতে রাজি হয়নি তারা।
সুইডেনে অপরাধী দলগুলোর সংঘর্ষে গোলাগুলির পর পালিয়ে যাওয়ার সময় ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহারের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী স্টকহোম থেকে ৪০ মিনিটের গাড়ি দূরত্বের উপসালায় গত এক দশকে অপরাধী দলগুলোর সংঘর্ষের সময় বহু গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, তবে অধিকাংশই ঘটেছে নগর কেন্দ্রের বাইরে। এর কয়েকটিতেও ইলেট্রিক স্কুটারে করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সুইডেনের বিচারমন্ত্রী গুন্নার স্ট্রমার জানিয়েছেন, তার মন্ত্রণালয় এই মামলাটির অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আর এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে।
একবিবৃতিতে স্ট্রমার বলেছেন, “উপসালার কেন্দ্রীয় এলাকায় একটি নির্মম সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পুরো উপসালা যখন ওয়ালপুর্গিস নাইট পালন শুরু করেছে তখনই ঘটনাটি ঘটে। যা ঘটেছে তা অত্যন্ত গুরুতর।”
এর আগে পুলিশ জানায়, তারা সাধারণ লোকজনের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় যারা গুলির শব্দ শুনেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছিল।
তদন্তকারীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গুলিবর্ষণের এক ঘটনায় তিনজনের নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ একে হত্যাকাণ্ড ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা পাঁচটি গুলির শব্দ শুনেছেন এবং লোকজনকে দৌঁড়ে আড়াল নিতে দেখেছেন। টিটিসহ বেশ কয়েকটি সুইডিশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, একটি চুল কাটার সেলুনের কাছে গোলাগুলির ঘটনাটি ঘটেছে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সুইডেনের ওরেব্রো শহরে গুলিবর্ষণের আরেক ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছিল। সেটি সুইডেনে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী নির্বিচার গুলিবর্ষণের ঘটনা ছিল। ৩৫ বছর বয়সী এক নিঃসঙ্গ বেকার একটি বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সুইডেন অপরাধী দলগুলোর সংঘর্ষজনিত সহিংসতায় ভুগছে। এসব সহিংসতায় ব্যাপকভাবে বন্দুক ব্যবহার করা হচ্ছে।
অপরাধী দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০২২ সালে দেশটির ডানপন্থি সংখ্যালঘু সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় এসে তারা আইন আরও কঠোর করে এবং পুলিশের ক্ষমতা বাড়ায়। আর ওরেব্রোর প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণের ঘটনার পর তারা বন্দুক আইন কঠোর করার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছিল।