Published : 25 May 2025, 04:21 PM
অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণপূর্বে ভয়াবহ বন্যায় আটকে পড়া কৃষকদের জন্য হেলিকপ্টার থেকে পশুখাদ্য ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী টারা মরিয়ার্টি।
এখন পর্যন্ত ৫ জনের প্রাণ কেড়ে নেওয়া এ বন্যার কারণে ওই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ এখনও বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এরই মধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মধ্য-উত্তর উপকূলীয় অঞ্চলে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ এ বন্যা বহু শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য গবাদি পশু ভাসিয়ে নিয়েছে, অনেক বাড়িঘর ধ্বংস করেছে।
বন্যায় অন্তত ১০ হাজার স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান কর্তৃপক্ষের।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত টারি শহরের কাছে অবস্থিত গ্রাম ঘিনি ঘিনিতে ড্যান প্যাচের বাড়ি বন্যার পানিতে ‘তছনছ’ হয়ে গেছে; ওই এলাকায় অনেক গবাদিপশু কয়েকদিন ধরে না খেয়ে আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
“এত বাজে পরিস্থিতি আমরা কখনো দেখিনি। এই এলাকার আশপাশের কেউ কখনোই এত খারাপ কিছু দেখেনি,” রয়টার্সকে বলেছেন প্যাচ।
বন্যার পানির কারণে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনবহুল এ রাজ্যের প্রায় ৩২ মানুষ এখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, আর পানি ধীরে ধীরে নামছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এমনটাই বলেছে নিউ সাউথ ওয়েলস জরুরি সেবা বিভাগ।
“নিউ সাউথ ওয়েলস সরকার বিচ্ছিন্ন পশুদের জন্য জরুরি পশুখাদ্য, পশুচিকিৎসা সেবা, ব্যবস্থাপনাজনিত পরামর্শ ও আকাশপথে সহায়তা দিচ্ছে,” এক বিবৃতিতে বলেছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী টারা মরিয়ার্টি।
হেলিকপ্টার থেকে ৪৩ বার এবং অন্যান্য উপায়ে আরও প্রায় ১৩০ বার ‘বিচ্ছিন্ন কৃষকদের কাছে তাদের আটকে পড়া গবাদিপশুর জন্য পশুখাদ্য পাঠানো হয়েছে’, বিবৃতিতে এমনটাই বলা হয়েছে।
টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে নদীর পানি উপচে একপর্যায়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আটকা পড়েছিলেন। রাস্তার মোড়, সাইনবোর্ড পানির নিচে চলে যায়, এবং অনেক গাড়ি প্রায় উইন্ডশিল্ড পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়।
বন্যায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার বয়স ৮০-র ঘরে। টারি শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের একটি প্লাবিত স্থাপনায় তার মরদেহ পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ম্যানিং নদীর পাশে অবস্থিত টারি থেকে রাজ্যের রাজধানী সিডনির দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটারের বেশি।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোর পরিস্থিতি এখনো সঙ্কটাপন্ন, তবে তার মধ্যেই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া চরম আবহাওয়াজনিত একাধিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। গত শতকের শেষের দিকে দেশটি ভয়াবহ খরা ও দাবানল দেখেছিল, ২০২১ এর শুরু থেকে দেখা দিচ্ছে একের পর এক বন্যা।